অর্থনৈতিক সংস্কারে উদ্যোগহীনতা

অনলাইন ডেক্স: অর্থনীতি নিয়ে দুটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন জমা পড়লেও সরকার এখনো সুপারিশ বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। এতে কাঠামোগত সংস্কারের ভবিষ্যৎ নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।

স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারের অর্থনৈতিক দুর্নীতি ও ভবিষ্যৎ কৌশল নির্ধারণে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার দুটি পৃথক প্রতিবেদন তৈরি করিয়েছে।
অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে গঠিত কমিটি গত ১ ডিসেম্বর প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে এটি জমা দেয়। টাস্কফোর্স প্রতিবেদন—কে এ এস মুরশিদের নেতৃত্বাধীন টাস্কফোর্স ৩০ জানুয়ারি তাদের প্রতিবেদন জমা দেয়।

তবে তিন মাস পেরিয়ে গেলেও এসব সুপারিশ বাস্তবায়নে দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই।

শ্বেতপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২৩ হাজার ৪০০ কোটি ডলার বিদেশে পাচার হয়েছে, যা বর্তমান বাজারদরে ২৮ লাখ কোটি টাকা। এছাড়া,

  • সরকারি প্রকল্পে ঘুষ— ১.৬১ লাখ থেকে ২.৮০ লাখ কোটি টাকা।
  • ব্যাংক খাতে অনিয়ম— ঋণের পরিমাণ ৬.৭৫ লাখ কোটি টাকা।
  • শেয়ারবাজার থেকে আত্মসাৎ— ১ লাখ কোটি টাকা।

শ্বেতপত্রে অবিলম্বে সাতটি বিষয়ে সংস্কারের সুপারিশ করা হয়, যার মধ্যে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা, বাজেট কাঠামো, এলডিসি উত্তরণ পরিকল্পনা ও উন্নয়ন সহযোগীদের সংলাপ আয়োজনের প্রস্তাব রয়েছে।

টাস্কফোর্স অর্থনীতি পুনর্গঠনে ধনীদের কাছ থেকে বেশি কর আদায়, শিক্ষা-স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি এবং রপ্তানিখাতের বিকাশে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার সুপারিশ করেছে। তবে সুপারিশগুলো বাস্তবায়নে উল্লেখযোগ্য কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না।

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য মনে করেন, সরকার সংস্কারে যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছে না। সেলিম রায়হান বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের বাধাহীন সংস্কার বাস্তবায়নের সুযোগ থাকলেও আমলাতান্ত্রিক জটিলতা ও অগ্রাধিকারের অভাবে তা হচ্ছে না।

বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, তিনি এখনো টাস্কফোর্সের প্রতিবেদন হাতে পাননি, যা টাস্কফোর্স প্রধান কে এ এস মুরশিদকে বিস্মিত করেছে।

ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি আবুল কাসেম খান বলেন, “এ দেশে ভালো নীতি হয়, কিন্তু বাস্তবায়িত হয় না। অন্তর্বর্তী সরকার যদি অন্তত কয়েকটি সুপারিশ বাস্তবায়ন করে, তাহলে ব্যবসায়ী মহলে আস্থা বাড়বে।”