অস্ট্রেলিয়া, জাপান ও কোরিয়ার সঙ্গেও এফটিএ আলোচনায় বাংলাদেশ

প্রতিবেদক: আগামী বছরের নভেম্বরে স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে উত্তরণের পরও রপ্তানিতে শুল্কসুবিধা ধরে রাখতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও অন্যান্য প্রধান বাণিজ্য অংশীদারের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) করতে চাইছে বাংলাদেশ।

বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান জানিয়েছেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ইতিমধ্যে ইইউকে এফটিএ প্রস্তাব পাঠিয়েছে এবং এ বিষয়ে আলোচনা করতে ২৯ সেপ্টেম্বর অভ্যন্তরীণ বৈঠক আহ্বান করা হয়েছে। তিনি বলেন, এই বাণিজ্য চুক্তি জরুরি, কারণ ভারত ও ভিয়েতনাম ইতোমধ্যেই ইইউর সঙ্গে এফটিএ করেছে।

ইইউ বাংলাদেশকে শুল্কমুক্ত সুবিধার মেয়াদ ২০২৯ সাল পর্যন্ত বাড়িয়েছে। এরপর এমন চুক্তি না হলে রপ্তানিকারকদের ১২% শুল্ক গুনতে হবে। বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে বছরে ২৫ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি (মোট রপ্তানির ৬০% এর বেশি) পণ্য ইইউতে যায়।

বাংলাদেশ জিএসপি প্লাস মর্যাদা পাওয়ার চেষ্টা করছে। তবে এর জন্য সুশাসন, শ্রম অধিকার, মানবাধিকার ও পরিবেশ সুরক্ষাসহ ৩২টি আন্তর্জাতিক সনদ অনুমোদন বাধ্যতামূলক। কঠিন শর্তের কারণে এফটিএ-কে বিকল্প সমাধান হিসেবে দেখা হচ্ছে।

অন্যদিকে—যুক্তরাজ্য ২০৩৫ সাল পর্যন্ত শুল্কমুক্ত সুবিধা বাড়িয়েছে, তবে ২৫% স্থানীয় মূল্য সংযোজন শর্ত দিয়েছে। তাই এখনই এফটিএর পরিকল্পনা নেই।

অস্ট্রেলিয়া এলডিসি উত্তরণের পর শুল্কমুক্ত সুবিধা দিতে রাজি হয়েছে, তবে স্থানীয় মূল্য সংযোজন ৫০%। বাংলাদেশ শর্তটি ৩০%-এ নামিয়ে আনার প্রস্তাব দেবে।

জাপান এর সঙ্গে অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি (ইপিএ) সইয়ের পথ প্রায় চূড়ান্ত হয়েছে।

দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে সিইপিএ আলোচনার প্রথম ধাপ শেষ হয়েছে।

কানাডার সঙ্গেও এফটিএ প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে, তবে অটোয়া এখনো তারিখ ঠিক করেনি।

এছাড়া বাংলাদেশ আসিয়ান ও আঞ্চলিক জোট আরসিইপি-তে যোগ দেওয়ার চেষ্টা করছে। এজন্য বিশেষ আলোচক দল গঠন করা হচ্ছে।

তবে এত উদ্যোগের পরও এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের একমাত্র স্বাক্ষরিত বাণিজ্য চুক্তি হলো ভুটানের সঙ্গে অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি (পিটিএ), যা ২০২০ সালের ডিসেম্বরে সই হয়েছিল। ভারতের সঙ্গে সিইপিএ আলোচনার সমাপ্তি ঘটলেও এখনো স্বাক্ষর হয়নি। আর যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেও কোনো তারিখ নির্ধারিত হয়নি।