
প্রতিবেদক: আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে ঋণের চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি ছাড়ে কোনো সুরাহা ছাড়াই সোমবারের ভার্চুয়াল বৈঠক শেষ হয়েছে। বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, এই মুহূর্তে ডলারের দরে বাজারভিত্তিক নমনীয়তা আনা সম্ভব নয়। আজ মঙ্গলবার বিষয়টি নিয়ে আরেক দফা বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সেখানেও ইতিবাচক বার্তা না এলে আগামী ১৯ মে চূড়ান্ত সুরাহার জন্য আরেকটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
আইএমএফের ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ কর্মসূচির আওতায় চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি ছাড়ের আগে শর্তপূরণ পর্যবেক্ষণে গত মাসে আইএমএফের একটি মিশন ঢাকায় আসে। তবে কোনো সমঝোতা ছাড়াই তারা ঢাকা ত্যাগ করে। বাংলাদেশ এখন ডলারের বিনিময় হারে নমনীয়তা আনতে আগ্রহী নয় বলেই আলোচনা গড়িয়েছে ওয়াশিংটনে। সেখানে আইএমএফের বসন্তকালীন সভার ফাঁকে সাইডলাইনে একাধিক বৈঠক হলেও কোনো সমঝোতায় পৌঁছানো যায়নি।
গতকাল অনুষ্ঠিত ভার্চুয়াল বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে অংশ নেন গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর, অর্থ সচিব ড. খায়েরুজ্জামান মজুমদার, অতিরিক্ত সচিব ড. জিয়াউল আবেদীন এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের দুই ডেপুটি গভর্নর ড. মো. হাবিবুর রহমান ও কবির আহাম্মদ।
বৈঠকে বাংলাদেশ পক্ষ থেকে জানানো হয়, বর্তমানে ডলারের বিনিময় হার বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। বৈধ ও অবৈধ উভয় চ্যানেলে দামের মধ্যে তেমন কোনো ব্যবধান নেই। উপরন্তু, রেমিট্যান্সে প্রায় ২৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। ১২২ টাকায় দীর্ঘদিন ডলারের দাম স্থিতিশীল থাকলেও রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে সামান্য নমনীয়তা দেখালেই ডলারের দর আবার বাড়তে শুরু করবে, যা বাজারে অস্থিরতা তৈরি করবে এবং মূল্যস্ফীতি ফের ঊর্ধ্বমুখী হবে।
এদিকে, বাজেট সহায়তা ছাড়ের বিষয়ে আলোচনার সময় এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) আইএমএফের কিস্তি ছাড় নিয়ে প্রশ্ন তোলে। গত রোববার ইতালির মিলানে এডিবির বার্ষিক সভায় সংস্থাটির দক্ষিণ, মধ্য ও পশ্চিম এশিয়ার ভাইস প্রেসিডেন্ট ইংমিং ইয়াংয়ের সঙ্গে বৈঠকের পর অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, এডিবিকে জানানো হয়েছে যে আইএমএফের সঙ্গে আলোচনা চলমান। তিনি আরও বলেন, হঠাৎ করে কঠিন শর্ত মেনে নিয়ে কিছু করা হবে না। বাজারভিত্তিক বিনিময় হার চালু করে বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা বা পাকিস্তানের মতো পরিস্থিতিতে যেতে চায় না।
ড. সালেহউদ্দিন আরও জানান, আইএমএফ বা এডিবির সহায়তা না পেলেও বাংলাদেশ নিজের বাস্তবতা অনুযায়ী বাজেট তৈরি করবে। তাঁর ভাষায়, ‘আইএমএফের কিস্তি ছাড়াই আমাদের অর্থনীতি স্থিতিশীল আছে।