
প্রতিবেদক: দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশ প্রথম দেশ হতে যাচ্ছে, যারা আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও)-এর মোট ১০টি মৌলিক কনভেনশনের সবকটিতে অনুসমর্থন করবে। এ পর্যন্ত বাংলাদেশ আইএলওর ৮টি কনভেনশন অনুসমর্থন করেছে। আগামী বুধবার দুটি মৌলিক কনভেনশনসহ আরও একটি, অর্থাৎ তিনটি কনভেনশন অনুসমর্থন করার পরিকল্পনা রয়েছে। এই তথ্য জানিয়েছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়।
আইএলওর এ কনভেনশনগুলোতে সই করবেন শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের উপস্থিতিতে ঢাকার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এই সই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এ সময় আইএলওর ঢাকা কার্যালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন।
বর্তমানে ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) সদস্যদেশগুলোর শ্রমমন্ত্রীদের ষষ্ঠ সম্মেলনে যোগ দিতে গিয়ে শ্রম উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন কাতারে রয়েছেন। তিনি দেশে ফিরবেন ২১ অক্টোবর। মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ওই সম্মেলনেও শ্রম উপদেষ্টা তিনটি কনভেনশন অনুসমর্থনের কথা জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ যে তিনটি কনভেনশনে অনুসমর্থন দেবে, তা হলো—পেশাগত নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য বিষয়ক কনভেনশন ১৫৫, কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তার মান উন্নয়নে প্রচারণামূলক কাঠামো কনভেনশন ১৮৭ এবং কর্মক্ষেত্রে সহিংসতা ও হয়রানি প্রতিরোধ বিষয়ক কনভেনশন ১৯০। এর মধ্যে ১৫৫ ও ১৮৭ আইএলওর মৌলিক কনভেনশন।
শ্রমসচিব মো. সানোয়ার জাহান ভূঁইয়া বলেছেন, “দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশই প্রথম দেশ হতে যাচ্ছে, যা আইএলওর ১০টি মৌলিক কনভেনশন অনুসমর্থন করছে।”
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে ২৪ জুলাই উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এই তিন কনভেনশনে অনুসমর্থন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সই করার পর সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় আইএলওর প্রধান কার্যালয়ে সংস্থার মহাপরিচালক গিলবার্ট এফ হাউংবোর কাছে প্রমাণপত্র পাঠানো হবে। ১৭ থেকে ২৮ নভেম্বর জেনেভায় আইএলওর পরিচালনা পর্ষদের ৩৫৫তম অধিবেশনে শ্রম উপদেষ্টার নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল অংশগ্রহণ করবে।
আইএলও ১৯১৯ সালে ভার্সাই চুক্তি অনুযায়ী গঠিত হয় এবং বর্তমানে ১৮৭টি দেশ সদস্য। বাংলাদেশ এ পর্যন্ত আইএলওর ৮টি মৌলিক কনভেনশনসহ ৩৬টি কনভেনশন ও একটি প্রটোকলে অনুসমর্থন করেছে।
কনভেনশন ১৫৫ (১৯৮১): পেশাগত নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য, অকুপেশনাল সেফটি অ্যান্ড হেলথ (ওএসএইচ) হিসেবে পরিচিত। ৮৩টি দেশ এ কনভেনশন অনুসমর্থন করেছে। কর্মক্ষেত্রে ওএসএইচ সংস্কৃতি গড়ে আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তিতে সহায়ক হবে।
কনভেনশন ১৮৭ (২০০৬): ৬৯টি দেশ অনুসমর্থন করেছে। লক্ষ্য—কর্মক্ষেত্রে পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নয়ন।
কনভেনশন ১৯০ (২০১৯): ৪৯টি দেশ অনুসমর্থন করেছে। পোশাকশিল্পসহ বিভিন্ন শিল্প খাতে নারী শ্রমিক ও কর্মীদের অপ্রত্যাশিত আচরণ ও হয়রানি থেকে রক্ষা করার উদ্দেশ্য।