
প্রতিবেদক: ঋণের সুদ ও সরকারি ট্রেজারি বিল-বন্ডের উচ্চ সুদের কল্যাণে ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইডিএলসি ফাইন্যান্স ২০২৩ সালে ২০০ কোটি টাকার মুনাফা অর্জন করেছে। এটি ২০২১ সালের পর প্রথমবারের মতো মুনাফার এই স্তরে পৌঁছেছে। গত বৃহস্পতিবার কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ ২০২৩ সালের আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদন করেছে, যেখানে মুনাফার তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, এক বছরের ব্যবধানে আইডিএলসি ফাইন্যান্সের মুনাফা ৪৯ কোটি টাকা বা প্রায় ৩২% বেড়েছে। ২০২৩ সালে কোম্পানিটি ১৫১ কোটি টাকা মুনাফা করেছে, যা ২০২২ সালে ছিল ১৯১ কোটি টাকা এবং ২০২১ সালে ছিল ২১২ কোটি টাকা।
ভালো মুনাফা করায় ২০২৪ সালের জন্য শেয়ারধারীদের জন্য লভ্যাংশ বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে আইডিএলসি। ২০২৩ সালের জন্য কোম্পানিটি ২০% লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে, যার মধ্যে ১৫% নগদ ও ৫% বোনাস। গত বছর ১৫% নগদ লভ্যাংশ দেওয়া হয়েছিল। ২০২৪ সালে ১৫% নগদ লভ্যাংশ দেওয়ার জন্য কোম্পানিটির খরচ হবে ৬২ কোটি ৩৫ লাখ টাকার বেশি, যেখানে উদ্যোক্তা-পরিচালকদের ৩৫ কোটি ৩৩ লাখ টাকা, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের ১৭ কোটি ৫৩ লাখ টাকা এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ৯ কোটি ২৬ লাখ টাকা প্রদান করা হবে।
আইডিএলসি ফাইন্যান্সের মুনাফা বৃদ্ধির পেছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে বিনিয়োগ থেকে প্রাপ্ত আয়। সরকারি ট্রেজারি বিল-বন্ডসহ অন্যান্য খাতের বিনিয়োগ থেকে কোম্পানিটি ২০২৩ সালে ১৪৩ কোটি টাকা আয় করেছে, যা ২০২২ সালে ছিল ২৯ কোটি টাকা। এই খাতে আয় আগের বছরের তুলনায় প্রায় ৪০০% বেড়েছে।
ঋণের সুদ বাবদ আয় গত বছর ২২৩ কোটি টাকা বেড়ে ১,৪৭৮ কোটি টাকায় পৌঁছেছে, যা ২০২৩ সালে ছিল ১,২৫৫ কোটি টাকা। তবে আমানতের সুদ বাবদ ব্যয় বেড়েছে ২৪১ কোটি টাকা বা ৩২%, ৯৯৭ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে, যা ২০২৩ সালে ছিল ৭৫৬ কোটি টাকা।
আইডিএলসি ফাইন্যান্সের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ জাভেদ নুর বলেন, “গত বছর ঋণের চাহিদা কম থাকায় আমরা সরকারি ট্রেজারি বিল-বন্ডে বিনিয়োগ করেছি। এ ছাড়া মন্দ ঋণ বা খেলাপি ঋণ কমিয়ে নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণ করেছি। আমাদের পোর্টফোলিও ব্যবস্থাপনা দক্ষতার সঙ্গে করেছি, ফলে মুনাফা বেড়েছে।”
২০২৩ সালে আইডিএলসি নিরাপত্তা সঞ্চিতি বাবদ ৭০ কোটি টাকা সংরক্ষণ করেছে, যা ২০২২ সালে ছিল ৯৮ কোটি টাকা।
আইডিএলসি ১৯৯২ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত এবং ৪০ বছরের পুরোনো একটি প্রতিষ্ঠান। বর্তমানে এর পরিশোধিত মূলধন ৪১৫ কোটি টাকা এবং এটি শেয়ারবাজারে ‘এ’ শ্রেণিভুক্ত কোম্পানি।