আইপিডিসির প্রথম প্রান্তিকে নিট মুনাফায় প্রায় দ্বিগুণ প্রবৃদ্ধি

প্রতিবেদক: আইপিডিসি ফাইন্যান্স পিএলসি ২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকে নিট মুনাফায় প্রায় ৯৮ দশমিক ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে, যা পরিমাণে ৩৭ মিলিয়ন টাকায় পৌঁছেছে। প্রতিষ্ঠানটির এই প্রবৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি ছিল সরকারি সিকিউরিটিজে বিনিয়োগ থেকে প্রাপ্ত উচ্চ রিটার্ন। এর ফলে প্রতিটি শেয়ারের আয় (ইপিএস) গত বছরের ০.০৫ টাকা থেকে বেড়ে ২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকে ০.০৯ টাকায় উন্নীত হয়েছে।

এই প্রান্তিকে মোট সুদের আয় ১৬.১ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২,২৮৮ মিলিয়ন টাকা। যদিও বাংলাদেশ ব্যাংকের ধারাবাহিক সুদহার বৃদ্ধির প্রভাবে অর্থায়নের ব্যয় ২২.৯ শতাংশ বেড়েছে, তবুও বিনিয়োগ আয়ের শক্তিশালী প্রবৃদ্ধি তা অনেকটাই সামলে নিয়েছে। মোট বিনিয়োগ আয় বছরে ১৩৪.৮ শতাংশ বেড়ে ২৩৯ মিলিয়ন টাকায় দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে শুধুমাত্র সরকারি সিকিউরিটিজ থেকেই আয় বেড়েছে ২০৮.৮ শতাংশ, যা পরিমাণে ১২৫ মিলিয়ন টাকা।

মোট পরিচালন আয় ১৪.৯ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৫৭ মিলিয়ন টাকা এবং পরিচালন মুনাফা ২৬.৬ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৩৭৪ মিলিয়ন টাকা। কৌশলগত সম্পদ ব্যবস্থাপনা, বাছাইকৃত নিয়োগ এবং কার্যকর খরচ নিয়ন্ত্রণের ফলে পরিচালন ব্যয়ের বৃদ্ধি মাত্র ৫.৩ শতাংশে সীমিত রাখা সম্ভব হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় শেয়ার প্রতি নিট পরিচালন নগদ প্রবাহ (NOCFPS) উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে ৪.৮৬ টাকা হয়েছে, যেখানে গত বছর এটি ছিল মাইনাস ১২.৩৯ টাকা। শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য (NAV) সামান্য বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ১৭.৮৩ টাকা।

২০২৫ সালের মার্চ শেষে আইপিডিসি ফাইন্যান্সের মোট সম্পদের পরিমাণ ছিল ৭৯,৫১১ মিলিয়ন টাকা, যা প্রতিষ্ঠানের স্থিতিশীল প্রবৃদ্ধির ইঙ্গিত দেয়। গ্রাহক আমানত ৭.৮ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৫৫,৭৮৬ মিলিয়ন টাকা, যার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি নন-ব্যাংক আর্থিক খাতের আমানত বাজারে প্রায় ১১ শতাংশ অংশীদারিত্ব ধরে রেখেছে। ঋণ ও অগ্রিম প্রদান ১.১ শতাংশ বৃদ্ধি পেলেও বিনিয়োগ পোর্টফোলিও ৩.৩ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।

এ প্রসঙ্গে আইপিডিসি ফাইন্যান্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রিজওয়ান দাউদ সামস বলেন, “আমাদের বছরের প্রথম প্রান্তিকের ফলাফল নিঃসন্দেহে সন্তোষজনক, যা আমাদের বহুমুখী ব্যবসায়িক মডেলের স্থিতিশীলতা প্রমাণ করে। যদিও ঋণের চাহিদা কিছুটা কমেছে, তবে ঝুঁকিভিত্তিক বিনিয়োগ ও বিচক্ষণ ব্যয় ব্যবস্থাপনার মধ্যে ভারসাম্য রেখে আমরা এ মুনাফা অর্জনে সক্ষম হয়েছি। আমরা গ্রাহকদের পাশে থাকতে এবং দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে ভূমিকা অব্যাহত রাখতে বদ্ধপরিকর।”

বর্তমান প্রতিকূল অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে—যেখানে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি স্থবির এবং অপ্রদেয় ঋণ বৃদ্ধি পাচ্ছে—সেখানে আইপিডিসি ফাইন্যান্সের এমন সাফল্যের পেছনে রয়েছে প্রতিষ্ঠানের আর্থিক শৃঙ্খলা, গ্রাহককেন্দ্রিক সমস্যা সমাধান এবং দীর্ঘমেয়াদি কৌশল বাস্তবায়নের সক্ষমতা। দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিতে দীর্ঘমেয়াদি মূল্য সংযোজনেও এই প্রবণতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।