
প্রতিবেদক: আগামী অর্থবছরের বাজেটে বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও দেশীয় শিল্প সুরক্ষায় বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। পাশাপাশি সামাজিক সুরক্ষা ভাতা বৃদ্ধির বিষয়েও ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।
বুধবার সচিবালয়ে অর্থ উপদেষ্টার দপ্তরে অনুষ্ঠিত এক প্রাক-বাজেট আলোচনায় দৈনিক পত্রিকার সম্পাদক ও টেলিভিশনের শীর্ষ নির্বাহীরা ব্যক্তি খাতের করমুক্ত আয়সীমা পাঁচ লাখ টাকা করার প্রস্তাব দেন। একই সঙ্গে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি এবং সঠিক পরিসংখ্যান তৈরির সুপারিশ করেন তাঁরা।
অর্থসচিব ড. খায়েরুজ্জামান আলোচনায় বলেন, “আগামী জুন নাগাদ মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশে নেমে আসবে। রপ্তানি ও রেমিট্যান্স বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক।”
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “আমরা প্রবৃদ্ধির চেয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণকে অগ্রাধিকার দিচ্ছি। দেশীয় শিল্প সুরক্ষার জন্য একটি বাস্তবসম্মত বাজেট দিতে চাই, যাতে পরবর্তী সরকার এটি বাতিল না করে।”
বৈঠকে অংশ নেওয়া গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বরা বাজেট নিয়ে বিভিন্ন মতামত ও সুপারিশ তুলে ধরেন-
ফিন্যানশিয়াল এক্সপ্রেস সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ বলেন “নতুন বাজেট কতটা পরবর্তী সরকারের জন্য সহায়ক হবে, সেটি গুরুত্বপূর্ণ।
যুগান্তর পত্রিকার সম্পাদক আবদুল হাই সিকদার বলেন ,মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমলেও দীর্ঘদিন ধরে এটি চলমান। তাই সামাজিক নিরাপত্তা, রেশনিং ব্যবস্থা পুনরায় চালু ও টিসিবির কার্যক্রম বাড়ানো উচিত।
সিনিয়র সাংবাদিক শওকত হোসেন মাসুম বলেন– এক অর্থবছরে সঠিকভাবে কত কর্মসংস্থান হয়েছে, তার নির্ভরযোগ্য তথ্য বাজেটে থাকা উচিত।
ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের শামীম জাহেদী বলেন – কালো টাকা বৈধকরণের করহার নির্ধারণে সমতা আনতে হবে।
সময়ের আলো সম্পাদক শাহনেওয়াজ করিম বলেন – করদাতাদের জন্য ‘ট্যাক্স কার্ড’ চালু করা যেতে পারে, যা তাঁদের সম্মানিত করবে।
ডিবিসি নিউজের সম্পাদক লোটন একরাম – বেকারত্ব কমাতে এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য বিশেষ সহায়তা প্রয়োজন। সামাজিক সুরক্ষা ভাতা ন্যূনতম পাঁচ হাজার টাকা হওয়া উচিত।
এটিএন বাংলার হেড অব নিউজ মনিউর রহমান বলেন – “বজেট বাস্তবায়নের কার্যকারিতা মূল্যায়ন করা জরুরি।”
বৈঠকে উল্লেখ করা হয়, দেশে ৫৪% পরিবারের টেলিভিশন সংযোগ থাকলেও এই খাত থেকে সরকার বা মিডিয়া প্রতিষ্ঠানরা যথাযথ রাজস্ব পাচ্ছে না। এতে সুষ্ঠু নীতিমালা প্রয়োজন বলে মত দেন আলোচকরা।
সম্ভাব্য বাজেট পরিকল্পনার আলোকে এবার বিনিয়োগ ও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণকে মূল অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি সামাজিক নিরাপত্তা খাতের সম্প্রসারণ ও দেশীয় শিল্প সুরক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।