আগামী তিন অর্থবছরে ২০ লাখ কোটি টাকার রাজস্ব আদায়ের পরিকল্পনা

অনলাইন ডেক্স: সরকার আগামী তিন অর্থবছরে ২০ লাখ ২০০ কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের প্রাক্কলন করেছে। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এর আওতায় আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৮ লাখ ৯ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। কর-জিডিপি অনুপাত বৃদ্ধি এবং রাজস্ব আয় বাড়ানোর লক্ষ্যেই এই বৃহৎ পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থ বিভাগ ও এনবিআরের কর্মকর্তারা।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরে রাজস্ব আয় ৫ লাখ ৮৫ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, যার মধ্যে ৫ লাখ ২১ হাজার কোটি টাকা আসবে এনবিআর থেকে।
২০২৬-২৭ অর্থবছরে এই লক্ষ্য বেড়ে ৬ লাখ ৫৯ হাজার ৮০০ কোটি টাকা করা হয়েছে, যার মধ্যে ৫ লাখ ৯৯ হাজার ৩০০ কোটি টাকা এনবিআর সংগ্রহ করবে।
২০২৭-২৮ অর্থবছরে রাজস্ব আয় ৭ লাখ ৫৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, যেখানে এনবিআর থেকে ৬ লাখ ৮৯ হাজার ৪০০ কোটি টাকা আদায়ের পরিকল্পনা রয়েছে।

বাজেট পর্যালোচনা থেকে দেখা যায়, প্রতিবছর নির্ধারিত রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে এনবিআর উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়। গত আট অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রাও অর্জিত হয়নি। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাস শেষে এনবিআর লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় প্রায় ৫৮ হাজার কোটি টাকা ঘাটতিতে রয়েছে।

গত অর্থবছরের একই সময়ে রাজস্ব আদায় হয়েছিল প্রায় ১ লাখ ৫৮ হাজার কোটি টাকা। তবে চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে এনবিআরের রাজস্ব আয় কমে ১ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকায় নেমে এসেছে।

বর্তমান ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে মোট ৫ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আয় নির্ধারণ করা হয়, যা জিডিপির ৯.৭ শতাংশ। এর মধ্যে ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা এনবিআর সংগ্রহের কথা ছিল, এবং অন্য উৎস থেকে ৬১ হাজার কোটি টাকা আদায়ের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। তবে আয় কম থাকায় অর্থবছরের মাঝামাঝি এসে এনবিআরের লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে ৪ লাখ ৬৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

বিগত বছরগুলোতে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য পূরণ করতে না পারার অন্যতম কারণ হলো কর আহরণ ব্যবস্থার সীমাবদ্ধতা, অর্থনৈতিক মন্দা, বিনিয়োগের ধীরগতি এবং কর ফাঁকির প্রবণতা। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, রাজস্ব আহরণের লক্ষ্য অর্জনে কর কাঠামো সংস্কার, করদাতাদের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং কর ব্যবস্থাপনার স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা জরুরি।

সরকার আগামী বছরগুলোতে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য নতুন করনীতি ও সংস্কার কার্যক্রম গ্রহণের পরিকল্পনা করছে, যাতে দেশের আর্থিক স্থিতিশীলতা ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে পর্যাপ্ত অর্থায়ন নিশ্চিত করা যায়।