আড়াই বছর পর ভারত থেকে বেনাপোল হয়ে পেঁয়াজ আমদানি শুরু, দাম কমার আশায় বাজারে স্বস্তি

প্রতিবেদক: দীর্ঘ আড়াই বছরের বিরতির পর অবশেষে ভারত থেকে বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে পুনরায় পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে। সোমবার (২৫ আগস্ট) রাতে প্রথম চালানে ১৫ মেট্রিক টন পেঁয়াজ দেশে প্রবেশ করে। বাজারে ছাড়ের সঙ্গে সঙ্গেই পাইকারি ও খুচরা বাজারে দাম কিছুটা কমতে শুরু করেছে।

আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ছিল বাগেরহাটের এস এম ওয়েল ট্রেডার্স, আর রপ্তানিকারক ভারতের ন্যাশনাল ট্রেডিং করপোরেশন। বেনাপোল স্থলবন্দরের উদ্ভিদ সংরক্ষণ কেন্দ্রের উপসহকারী কর্মকর্তা শ্যামল কুমার নাথ জানিয়েছেন, পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর প্রথম চালান ছাড়ের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। প্রতি মেট্রিক টনের দাম ধরা হয়েছে ৩০৫ মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৩৭ হাজার ৪২৯ টাকা)। কেজিপ্রতি বাজারদর এখন ৫৮-৬০ টাকা।

দাম প্রভাব ইতিমধ্যেই পড়েছে; সোমবার খুচরা বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছিল ৭০ টাকায়, মঙ্গলবার তা নেমে এসেছে ৬২-৬৫ টাকায়। ক্রেতারা উল্লেখ করেছেন, দীর্ঘদিন অযৌক্তিকভাবে দাম বাড়ানো হয়েছিল, এখন দাম কমায় স্বস্তি মিলেছে। পাইকারি বিক্রেতারা বলছেন, কিছু ব্যবসায়ী মজুত করে দাম বাড়িয়েছিল, কিন্তু আমদানি শুরু হওয়ায় কেজিপ্রতি ৬-৭ টাকা কমেছে।

দেশে প্রতিবছর পেঁয়াজের চাহিদা ২৭-২৮ লাখ মেট্রিক টন। ২০২৪ সালে উৎপাদন হয়েছিল প্রায় ৩২ লাখ মেট্রিক টন, অর্থাৎ কাগজে-কলমে চাহিদার চেয়ে ৪-৫ লাখ টন বেশি। কিন্তু বাজারে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কারণে কার্যকর ঘাটতি তৈরি হয়েছে।

বেনাপোল আমদানি-রপ্তানি সমিতির সহসভাপতি আমিনুল হক জানিয়েছেন, কৃষকের স্বার্থ রক্ষায় এতদিন আমদানি সীমিত ছিল। তবে বাজারে সিন্ডিকেটের কারণে দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় সরকার বাধ্য হয়ে আমদানির অনুমতি দিয়েছে। প্রথম চালান ছাড়ের পর সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এ সপ্তাহে ধাপে ধাপে আরও কয়েক শ টন পেঁয়াজ আসবে। সেপ্টেম্বরে বড় চালান আসার প্রত্যাশা রয়েছে, ফলে বাজারে সরবরাহ বাড়বে এবং দাম আরও কমতে পারে।

বেনাপোল স্থলবন্দরের পরিচালক মো. শামীম হোসেন বলেন, “আড়াই বছর পর আবারও পেঁয়াজ আমদানি শুরু হলো। প্রথম চালান পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে ছাড় করা হয়েছে। আগামী দিনে বড় চালান এলে তা সামলানোর জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুতি রয়েছে।”