আবারও বড় পরিসরে কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘোষণা অ্যামাজনের

অনলাইন ডেক্স: বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান অ্যামাজন আবারও বিপুলসংখ্যক কর্মী ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এবার প্রায় ১৪ হাজার কর্মী ছাঁটাই করা হবে, তবে সাধারণ কর্মী নয়—মূলত ব্যবস্থাপনা পর্যায়ে এই ছাঁটাই কার্যকর হবে।

চলতি বছরের প্রথম কয়েক মাসের মধ্যেই এই ছাঁটাই সম্পন্ন করা হবে। এর ফলে অ্যামাজনের বৈশ্বিক কর্মীসংখ্যা ১৩ শতাংশ কমে যাবে। বর্তমানে কোম্পানির মোট কর্মীসংখ্যা ১ লাখ ৫ হাজার ৭০০, যা ছাঁটাইয়ের পর নেমে আসবে ৯১ হাজার ৯৩৬ জনে। মূলত ব্যয় সংকোচনের কৌশল হিসেবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

কয়েক মাস ধরেই অ্যামাজনে কর্মী সংকোচনের প্রস্তুতি চলছিল। বিভিন্ন দলে পরিবর্তন আনা হচ্ছে এবং খরচ কমানোর উদ্দেশ্যে ব্যবস্থাপক পর্যায়ে ছাঁটাই করা হচ্ছে।

অ্যামাজনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) অ্যান্ডি জেসি সম্প্রতি কোম্পানির কৌশল প্রণয়ন ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের দক্ষতা বাড়ানোর কথা বলেছেন। তাঁর মতে, ব্যবস্থাপক ও প্রদায়কদের (কর্মীদের) অনুপাত অন্তত ১৫ শতাংশ হওয়া উচিত। তিনি ২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকের মধ্যে এই লক্ষ্য অর্জনের সময়সীমা নির্ধারণ করেছেন। সেই লক্ষ্যে এবার ব্যবস্থাপনা পর্যায়ের কর্মীদের সংখ্যা কমানো হচ্ছে।

মর্গ্যান স্ট্যানলির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অ্যামাজন প্রায় ১৩ হাজার ৮৩৪টি ব্যবস্থাপনা পদ বাতিল করতে পারে। প্রতিষ্ঠানটি দাবি করেছে, দক্ষতার ঘাটতি রয়েছে এমন কর্মীদেরই ছাঁটাই করা হবে। এই প্রক্রিয়ায় কর্মী বাছাইয়ের জন্য বিভিন্ন মূল্যায়ন পদ্ধতিও অবলম্বন করা হয়েছে।

মহামারি চলাকালে প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর মতো অ্যামাজনের কর্মীসংখ্যাও ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পায়। ২০১৯ সালে যেখানে কর্মীসংখ্যা ছিল ৭ লাখ ৯৮ হাজার, ২০২১ সালের শেষ নাগাদ তা বেড়ে প্রায় ১৬ লাখে পৌঁছে যায়।

তবে মহামারির পর চাহিদা কমে গেলে, অ্যামাজনসহ বড় প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠানগুলো কর্মী ছাঁটাই শুরু করে।

২০২২ ও ২০২৩ সালে অ্যামাজন মোট ২৭ হাজার কর্মী ছাঁটাই করে।২০২২ সালের শেষ দিকে গুগল, মেটা, টুইটারসহ বড় প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠানগুলোও বিপুলসংখ্যক কর্মী ছাঁটাই করে।শুধু প্রযুক্তি নয়, অর্থ, গণমাধ্যম, অটোমোটিভসহ বিভিন্ন সেক্টরেও ছাঁটাইয়ের প্রবণতা দেখা যায়।

সম্প্রতি এআই খাতে বিনিয়োগের প্রতিযোগিতা বেড়ে যাওয়ায়, প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠানগুলো ব্যয় সংকোচনের মাধ্যমে মূলধন সংরক্ষণে মনোযোগ দিচ্ছে। অ্যামাজনও একই কারণে কর্মী ছাঁটাই করছে, যেন এআই খাতে আরও বেশি বিনিয়োগ করা সম্ভব হয়।

একের পর এক ছাঁটাইয়ের ফলে প্রযুক্তি খাতের কর্মসংস্থানের ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।