আমিরাতে টাগবোট রপ্তানি করছে ওয়েস্টার্ন মেরিন, মূল্য ১৮ কোটি টাকা

প্রতিবেদক: চট্টগ্রামভিত্তিক জাহাজ নির্মাতা ও রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড চলতি জুলাই মাসে সংযুক্ত আরব আমিরাতে দুটি টাগবোট রপ্তানি করতে যাচ্ছে। ‘খালিদ’ ও ‘ঘায়া’ নামের এই দুটি সহায়ক জলযান সংযুক্ত আরব আমিরাতভিত্তিক প্রতিষ্ঠান মারওয়ান শিপিং লিমিটেডের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম বোট ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ওয়েস্টার্ন মেরিনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ক্যাপ্টেন সোহেল হাসান। এ সময় ক্রেতা প্রতিষ্ঠানটির প্রতিনিধিসহ আমন্ত্রিত অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, দুটি টাগবোটের মোট রপ্তানি মূল্য ১৫ লাখ ২৫ হাজার মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১৮ কোটি ৬০ লাখ টাকা। ওয়েস্টার্ন মেরিন ও মারওয়ান শিপিংয়ের মধ্যে ২০২৩ সালে আটটি জাহাজ নির্মাণের একটি চুক্তি হয়। এই চুক্তির আওতায় রয়েছে দুটি টাগবোট, চারটি ল্যান্ডিং ক্রাফট এবং দুটি ট্যাংকার। চলতি বছরের জানুয়ারিতে ‘রায়ান’ নামের একটি ল্যান্ডিং ক্রাফট সফলভাবে হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকি পাঁচটি জাহাজ আগামী বছরের মধ্যে হস্তান্তর করা হবে বলে জানানো হয়।

ওয়েস্টার্ন মেরিন কর্তৃপক্ষ জানায়, ২০১৭ সালে মারওয়ান শিপিংয়ের কাছে প্রথমবারের মতো জাহাজ রপ্তানি করে তারা। এখন পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটি ১১টি দেশে মোট ৩৪টি জাহাজ রপ্তানি করেছে, যার বাজারমূল্য ১৩ কোটি ৭০ লাখ মার্কিন ডলারেরও বেশি।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রতিরক্ষা ও জাতীয় সংহতি উন্নয়নবিষয়ক প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) আবদুল হাফিজ, বাংলাদেশে নিযুক্ত সংযুক্ত আরব আমিরাত দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স হুমাইদ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ দারউইশ আলতামিমী এবং মারওয়ান শিপিংয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমেদ আলমারজুকি।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ থেকে প্রথমবারের মতো জাহাজ রপ্তানি করে ঢাকাভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আনন্দ শিপইয়ার্ড অ্যান্ড স্লিপওয়েজ। ২০০৮ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর ডেনমার্কে জাহাজ রপ্তানির মাধ্যমে দেশের এই শিল্পের যাত্রা শুরু হয়। এরপর ২০১০ সালে চট্টগ্রামের ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড জার্মানিতে সমুদ্রগামী জাহাজ রপ্তানি করে দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে এই খাতে যুক্ত হয়। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে শুধু এই দুটি প্রতিষ্ঠানই জাহাজ রপ্তানি করে থাকে।

ওয়েস্টার্ন মেরিন ২০১৪ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। তবে দীর্ঘদিন ধরে আর্থিক সংকটে থাকার কারণে প্রতিষ্ঠানটি শেয়ারধারীদের কোনো লভ্যাংশ দিতে পারেনি। বর্তমানে এটি দুর্বল মানের ‘জেড’ শ্রেণিভুক্ত কোম্পানি হিসেবে চিহ্নিত। সর্বশেষ গতকাল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) কোম্পানিটির শেয়ারের বাজারমূল্য ছিল ৮ টাকা ৯০ পয়সা।