
প্রতিবেদক: বাংলাদেশে কোম্পানি, বাণিজ্য সংগঠন, অংশীদারি প্রতিষ্ঠান ও সোসাইটি গঠন ও পরিচালনার ক্ষেত্রে নামের ছাড়পত্র, নিবন্ধন, রিটার্ন ফাইলিং, প্রত্যয়িত অনুলিপি প্রদান, প্রতিষ্ঠান অবসায়ন ও স্ট্রাক অফসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সেবা দেয় যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তর (আরজেএসসি)। ব্যবসা শুরু বা বন্ধের প্রতিটি ধাপে আরজেএসসির আনুষ্ঠানিক অনুমোদন ও সনদ প্রয়োজন। তবে উদ্যোক্তাদের মাঝে আবেদন প্রক্রিয়া, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও ফি নিয়ে অনেক প্রশ্ন থাকে।
নামের ছাড়পত্র হলো প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধনের প্রথম ধাপ, যেখানে প্রস্তাবিত নামের অনন্যতা যাচাই করা হয়। একই নামে একাধিক প্রতিষ্ঠান নিবন্ধিত হতে না পারে। নতুন প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধনের আগে নামের ছাড়পত্র বাধ্যতামূলক। আবেদন ও ফি জমা দেওয়ার পর আরজেএসসি নাম যাচাই করে ৩০ দিনের জন্য ছাড়পত্র প্রদান করে। এই সময়ের মধ্যে নিবন্ধনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও ফি জমা দিতে হয়।
আরজেএসসির ওয়েবসাইট থেকে অনলাইনে নামের ছাড়পত্র এবং প্রয়োজনীয় নথি জমা দিয়ে নিবন্ধনের আবেদন করা হয়। প্রাইভেট কোম্পানি, পাবলিক কোম্পানি, এক ব্যক্তির মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান, বিদেশি কোম্পানি, অংশীদারি প্রতিষ্ঠান ও সোসাইটির ক্ষেত্রে আলাদা আলাদা নথিপত্র প্রয়োজন হয়।
নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত তথ্য নির্ধারিত সময়ে আরজেএসসিতে জমা দিতে হয়। এর মধ্যে বার্ষিক রিটার্ন ফাইলিং এবং যেকোনো পরিবর্তনের জন্য দেওয়া রিটার্ন ফাইলিং অন্তর্ভুক্ত। ভুল বা অসম্পূর্ণ তথ্য থাকলে সংশোধনের সুযোগ দেওয়া হয়।
আরজেএসসি থেকে নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন নথির প্রত্যয়িত অনুলিপি (যেমন পরিচালকের তথ্য, নিবন্ধনপত্র, মেমোরেন্ডাম, শেয়ার হোল্ডার তালিকা, ব্যালান্স শিট, উইন্ড আপ বা স্ট্রাক অফ সার্টিফিকেট) নেওয়া যায়। তবে লাভ-ক্ষতির হিসাব সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জন্যই সীমাবদ্ধ।
কোনো প্রতিষ্ঠান আদালতের আদেশে বা স্বেচ্ছায় বন্ধ করা যায়। আদালতের মাধ্যমে উইন্ডিং আপ হলে পিটিশন জমা দিয়ে প্রক্রিয়া শুরু হয় এবং গেজেটে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়। স্বেচ্ছায় উইন্ডিং আপের জন্য রেজল্যুশন গ্রহণ ও সরকারি বিজ্ঞপ্তি দেওয়া আবশ্যক। প্রক্রিয়া শেষে চূড়ান্ত সভা অনুষ্ঠিত হয়ে রিটার্ন জমা দিলে প্রতিষ্ঠান বিলুপ্ত হয়।
যখন কোনো কোম্পানি দীর্ঘদিন কার্যক্রম না চালিয়ে থাকে এবং বার্ষিক রিটার্ন জমা দেয় না, তখন আরজেএসসি কোম্পানির কার্যক্রম যাচাই করে নোটিশ দেয়। প্রয়োজনীয় সময়ের মধ্যে উত্তর না পেলে কোম্পানির নিবন্ধন বাতিল করে সরকারি গেজেটে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয় এবং কোম্পানি বিলুপ্ত বলে গণ্য হয়।