
প্রতিবেদক: চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মে—এই পাঁচ মাসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি ১৭.৬১ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৬৮ কোটি ডলারে। একই সময়ে চীন রপ্তানি করেছে ১ হাজার ১০ কোটি ডলারের পোশাক, যার প্রবৃদ্ধি ২০.৮৬ শতাংশ।
ইইউর পরিসংখ্যান সংস্থা ইউরোস্ট্যাটের হালনাগাদ তথ্যে দেখা যায়, ২০২৪ সালের প্রথম পাঁচ মাসে ইইউতে বিশ্বজুড়ে মোট ৩,৯৭১ কোটি ডলারের পোশাক আমদানি হয়েছে, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১২ শতাংশ বেশি।
ইইউর বাজারে এখনো শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে চীন। তবে খুব কাছাকাছি অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। দুই দেশের রপ্তানির ব্যবধান মাত্র ৪২ কোটি ডলার। এ তালিকায় পরবর্তী অবস্থানে রয়েছে তুরস্ক, ভারত, কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম, পাকিস্তান, মরক্কো, শ্রীলঙ্কা ও ইন্দোনেশিয়া।
যদিও পাঁচ মাস মিলিয়ে বাংলাদেশের রপ্তানি বেড়েছে, মে মাসে রপ্তানিতে কিছুটা ধস নামে। ওই মাসে বাংলাদেশ ইইউতে রপ্তানি করেছে ১৬১ কোটি ডলারের পোশাক, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৬.৪৬ শতাংশ কম। বিপরীতে, চীনের মে মাসের রপ্তানি বেড়ে দাঁড়ায় ১৭১ কোটি ডলারে—১৭.৮৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি।
বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের বড় গন্তব্য ইইউ, যেখানে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে মোট রপ্তানির প্রায় ৫০ শতাংশ গেছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রেও বাংলাদেশের বড় বাজার রয়েছে। কিন্তু সেদেশে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক নীতির কারণে বাংলাদেশি পণ্যের প্রতিযোগিতা কমেছে। এতে করে চীনের অনেক প্রতিষ্ঠান যুক্তরাষ্ট্রের পরিবর্তে ইইউতে রপ্তানির দিকে ঝুঁকছে, যার প্রভাব পড়ছে ইইউ বাজারেও।
তুরস্কের রপ্তানি কমেছে ৬ শতাংশ, যা প্রথম পাঁচ মাসে দাঁড়িয়েছে ৩৮৭ কোটি ডলারে। অন্যদিকে, ভারত একই সময়ে ২৫১ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে, যার প্রবৃদ্ধি ১৬ শতাংশ। শুধু মে মাসেই ভারত ৫০ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে, যার প্রবৃদ্ধি ২ শতাংশ।
বাংলাদেশ ইইউ বাজারে চীনকে ঘনিষ্ঠভাবে অনুসরণ করলেও মে মাসের নেতিবাচক প্রবণতা এবং বৈশ্বিক বাণিজ্য রাজনীতির কারণে সামনে চ্যালেঞ্জ বাড়তে পারে। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক নীতি এবং ইইউতে চীনের দখলদারি বাড়ার কারণে বাংলাদেশের প্রস্তুতি নেওয়া জরুরি।