
অনলাইন ডেক্স: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একের পর এক শুল্ক হুমকি দিয়ে চলেছেন, এবার তাঁর লক্ষ্য ইউরোপের জনপ্রিয় পানীয় পণ্য। গত শুক্রবার (১৫ মার্চ) তিনি ঘোষণা দেন, ফ্রেঞ্চ ওয়াইন, কনিয়্যাক ব্র্যান্ডি ও অন্যান্য ইউরোপীয় পানীয়ের ওপর ২০০% আমদানি শুল্ক আরোপ করা হবে। ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত নতুন করে যুক্তরাষ্ট্র-ইউরোপ বাণিজ্যযুদ্ধের শঙ্কা বাড়িয়েছে।
এমন তথ্য উঠে এসেছে বিবিসির এক প্রতিবেদনে।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্র ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামে ২৫% শুল্ক আরোপ করে, যার আওতায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)–ও পড়ে। পাল্টা জবাবে ইইউও মার্কিন হুইস্কি ও অন্যান্য পণ্যে শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেয়। এর প্রতিক্রিয়ায় ট্রাম্প সাফ জানিয়ে দেন, যতবার তাঁদের পণ্যে শুল্ক আরোপ করা হবে, ততবারই তিনি পাল্টা ব্যবস্থা নেবেন।
বিশ্ব অর্থনীতির বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, এই শুল্ক-পাল্টা শুল্কের লড়াই বিশ্ববাণিজ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। ইতিমধ্যে কানাডা, যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বৃহত্তম অ্যালুমিনিয়াম সরবরাহকারী দেশ, পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছে এবং বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (WTO) দ্বারস্থ হয়েছে।
শুক্রবার (১৫ মার্চ) ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ারবাজারে পতন ঘটে, যা বিনিয়োগকারীদের উদ্বেগ বাড়িয়েছে।
জাতিসংঘের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে বিশ্ববাণিজ্যের আকার ১.২ লাখ কোটি ডলার বেড়ে ৩৩ লাখ কোটি ডলারে পৌঁছেছে। ভারত ও চীনের মতো দেশের বাণিজ্য উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, তবে শুল্ক যুদ্ধের প্রভাব এই প্রবৃদ্ধিতে কীভাবে প্রভাব ফেলবে, তা পর্যবেক্ষণ করা প্রয়োজন।
মেরি টেইলর নামের এক মার্কিন আমদানিকারক বলেন, ট্রাম্পের শুল্ক নীতি তাঁদের ব্যবসা ও জীবিকার জন্য বড় হুমকি।
তিনি প্রতিবছর ২০ লাখ বোতল ইউরোপীয় পানীয় আমদানি করেন।
২৫% শুল্কের ধাক্কা কোনোভাবে সামলালেও ২০০% শুল্ক তাঁদের ব্যবসার জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হবে।এই শুল্ক কার্যকর হলে রেস্তোরাঁ, বার ও পরিবেশকদের ব্যবসাও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন সিদ্ধান্তের ফলে ক্ষতির মুখে পড়বে—ফ্রেঞ্চ ওয়াইন ও স্পিরিটস,ইতালিয়ান ওয়াইন ও স্পিরিটস,ডাচ বিয়ার ও স্পিরিটস,স্প্যানিশ ওয়াইন,আইরিশ বিয়ার ও স্পিরিটস,ইতালিয়ান ভারমৌথস
ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ট্রাম্প ইউরোপীয় ইউনিয়ন (EU) সম্পর্কে নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করেছেন। তিনি দাবি করে,ইউরোপ যুক্তরাষ্ট্রের পুরোনো মিত্র হলেও, ইউরোপীয় ইউনিয়ন গঠনের মূল উদ্দেশ্যই ছিল যুক্তরাষ্ট্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করা।
ট্রাম্পের ২০০% শুল্কের ঘোষণায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের মধ্যকার বাণিজ্য সম্পর্ক আরও উত্তপ্ত হচ্ছে। এই শুল্ক যুদ্ধ বিশ্ব অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে, যার ফল কী হবে, তা এখনই নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।