
প্রতিবেদক: প্রথমবারের মতো ৭৫০ কোটি টাকার রেকর্ড মুনাফা করেছে বেসরকারি খাতের ইস্টার্ন ব্যাংক। ২০২৩ সালে ব্যাংকটি কর-পরবর্তী মুনাফা করেছিল ৬১১ কোটি টাকা। এক বছরের ব্যবধানে মুনাফা বেড়েছে ১৩৯ কোটি টাকা বা ২৩ শতাংশ।
রেকর্ড মুনাফার পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাংকটি গত বছরের শেয়ারধারীদের জন্য ৩৫ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। এর মধ্যে সাড়ে ১৭ শতাংশ নগদ ও সাড়ে ১৭ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ রয়েছে। ২০২০ সালের পর এটিই ব্যাংকের সর্বোচ্চ লভ্যাংশ।
অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে ইস্টার্ন ব্যাংকের মুনাফা বেড়েছে। ২০১৯ সালে মুনাফায় ৩০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছিল, যা ছিল সর্বোচ্চ। তবে টাকার অঙ্কে সবচেয়ে বেশি মুনাফা বেড়েছে ২০২৪ সালে।
২০২৪ সালের শেষে ব্যাংকের আমানত ৪৫ হাজার ৭৬৯ কোটি টাকায় পৌঁছেছে, যা ২০২৩ সালে ছিল ৩৬ হাজার ৬১০ কোটি টাকা। একইভাবে, ঋণের পরিমাণ ৪১ হাজার ৭২ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে, যা আগের বছর ছিল ৩৫ হাজার ৩৩৬ কোটি টাকা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত বছরের রেকর্ড মুনাফার পেছনে প্রধান ভূমিকা রেখেছে ব্যাংকের বিনিয়োগ আয়। সরকারি ট্রেজারি বিল ও বন্ডে বিনিয়োগ করে ব্যাংকটি উল্লেখযোগ্য পরিমাণ আয় করেছে। শুধুমাত্র জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর সময়ে বিনিয়োগ থেকে ব্যাংকটির আয় হয়েছে ৭৮৯ কোটি টাকা।
১৯৯২ সালে ইস্টার্ন ব্যাংক যাত্রা শুরু করেছিল ৩১৪ কোটি টাকার লোকসান নিয়ে। এরপর ১৯৯৫ সালে প্রথম মুনাফা করে এবং ২০০০ সালে শেয়ারহোল্ডারদের প্রথম লভ্যাংশ দেয়। ২০১০ সালে ব্যাংকের মুনাফা ২০০ কোটি টাকা ছাড়ায়।
বর্তমানে ইস্টার্ন ব্যাংকের সারা দেশে ৮৫টি শাখা, ৪৫টি উপশাখা এবং ১১৮টি এজেন্ট আউটলেট রয়েছে। ২০২৪ সালের শেষে ব্যাংকের কর্মীসংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৪২৮ জন।
ইস্টার্ন ব্যাংকের শেয়ারহোল্ডারদের সর্বোচ্চ লভ্যাংশ দেওয়া হয়েছিল ২০১০ সালে, যখন ৫৫ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয়েছিল। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেওয়া হয় ২০০৫ সালে, আর তৃতীয় সর্বোচ্চ ৩৫ শতাংশ লভ্যাংশ দেওয়া হয় ২০২০ ও ২০২৪ সালে।
ইস্টার্ন ব্যাংকের এ রেকর্ড মুনাফা ব্যাংকিং খাতে ইতিবাচক বার্তা দিচ্ছে এবং বিনিয়োগকারীদের জন্য এক নতুন আশার আলো ছড়াচ্ছে।