
প্রতিবেদক: রাজধানীর সবচেয়ে বড় কাঁচাবাজার কারওয়ান বাজারে এখনো জমে ওঠেনি ঈদের পরের বেচাকেনা।বুধবার সকালে ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে ক্রেতা হাতে গোনা কয়েকজন। দোকানপাটের অর্ধেকেরও বেশি এখনো বন্ধ। যারা এসেছেন, তাঁদের বেশির ভাগই নিম্ন ও নিম্নমধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ।
তেজগাঁওয়ের বেগুনবাড়ির বাসিন্দা মনির হোসেন ১৫ বছর ধরে কারওয়ান বাজারেই একটি লোহালক্কড়ের দোকানে কাজ করেন। মাসে আয় ২৫–৩০ হাজার টাকা। এর মধ্যে সাত হাজার টাকা চলে যায় বাসা ভাড়ায়। বাকি টাকা দিয়ে চারজনের সংসার চালান তিনি। টানাটানির মধ্যেও সুযোগ পেলে পরিবার নিয়ে আশপাশে ঘুরতে বের হন। আজ সকালে শহর ফাঁকা দেখে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে বেরিয়েছিলেন। বাসায় ফেরার পথে বাজারে ঢুকে কিছু সবজি ও মাছ কেনেন।
তিনি বলেন, বাজার এখনো আগের মতো জমে ওঠেনি। এই সময়ে সব ধরনের পণ্যের দাম কিছুটা কম থাকে। তাই বাসায় যাওয়ার আগে ভাবলাম কিছু কেনা যায় কি না দেখে যাই। শেষমেশ এক কেজি মাছ আর কিছু শাকসবজি কিনলাম।
বাজারে ঘুরে দেখা গেছে, মাছ-মুরগি ও শাকসবজির অল্প কিছু দোকান খোলা থাকলেও মাংসের দোকান প্রায় পুরোপুরি বন্ধ। ক্রেতাদের উপস্থিতিও খুবই কম। ব্যবসায়ীরা জানান, ঈদের ছুটির কারণে এখনো অনেকেই ঢাকায় ফেরেননি। ফলে বাজার জমে ওঠেনি। দোকানপাট ধীরে ধীরে খুলছে, তাতেই কিছুটা করে সরবরাহ বাড়ছে।
সবজি বিক্রেতা মাহবুব আলম জানান, ঈদের পর এই সময়ে বাজারে সাধারণত নিম্ন ও নিম্নমধ্যবিত্ত মানুষের আনাগোনা বেশি থাকে। কারণ অনেকেরই বাসায় ফ্রিজ নেই, তাই প্রতিদিন বাজারে আসতে হয়। সামনে চাহিদা ও সরবরাহ—দুই-ই বাড়বে।”
এ সময় পটোল, বেগুন, করলা, ঢ্যাঁড়স, বরবটিসহ বেশির ভাগ সবজি ৫০–৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। মাছের দামও তুলনামূলকভাবে কম। কারওয়ান বাজারের কামারপট্টি এলাকায় রাস্তার পাশে মাছ বিক্রি করছেন আনোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, “ঈদের সময় মাছের চাহিদা কম থাকে। তবে এখানে সাধারণত নিম্ন আয়ের মানুষের ভিড় বেশি হয়। কিচেন মার্কেটে পাবদা মাছ যেখানে ৪০০ টাকা, আমরা তা বিক্রি করি ২৫০ টাকায়।
তেজগাঁওয়ের বাসিন্দা জিকো রোজারিও জানালেন, মূল বাজারের চেয়ে এখানে মাছের দাম কম। তাই ৩০০ টাকা দিয়ে জীবন্ত এক কেজি শিং মাছ কিনেছি।”
ব্যবসায়ীরা আশা করছেন, আগামীকাল বুধবার থেকে বাজারে সরবরাহ ও ক্রেতার সংখ্যা দুটোই বাড়বে। ঈদের ছুটির আমেজ কেটে গেলে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হবে বাজারের চিত্র।