ঈদের বাজার জমেনি, মসলার দামেও নেই আগুন

প্রতিবেদক: পবিত্র ঈদুল আজহা সামনে। এরই মধ্যে কোরবানির মাংস রান্নার উপকরণ হিসেবে মসলাজাতীয় পণ্যের কেনাকাটা শুরু করেছেন অনেকে। তবে বাজার এখনো জমে ওঠেনি বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ বেশি থাকায় পেঁয়াজ, রসুন ও আদার দাম তুলনামূলকভাবে কম রয়েছে।

পেঁয়াজের মতোই বাজারে আদা ও রসুনের দামও কমেছে। ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, গত বছরের তুলনায় রসুনের দাম প্রায় ৩০ টাকা কমেছে। বর্তমানে চীন থেকে আমদানি করা রসুন বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১৩০ টাকায়, আর দেশি রসুনের দাম ১০০ টাকার আশপাশে রয়েছে। সরবরাহ ভালো থাকলেও এখনো রসুনের বাজারে ক্রেতার সংখ্যা কম।

আদার বাজারেও একই প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। গত বছর কোরবানির সময় আদার দাম ছিল প্রতি কেজি ১৮০ টাকার ওপরে, সেখানে এবার তা নেমে এসেছে ৮৫ থেকে ১২০ টাকার মধ্যে। ভারতীয় আদা বিক্রি হচ্ছে ৮৫ থেকে ৯০ টাকায়, চীনা আদা ১১৫ থেকে ১২০ টাকায়, আর দেশি আদা পাওয়া যাচ্ছে ৯০ টাকার আশপাশে। সরবরাহ পর্যাপ্ত থাকলেও খুচরা বাজারে এখনো বিক্রি বাড়েনি।

নগরীর বিভিন্ন খুচরা বাজারে আদা ও রসুনের দাম পাইকারি দরের চেয়ে সর্বোচ্চ ১৫ টাকা পর্যন্ত বেশি রাখা হচ্ছে। বিক্রেতারা বলছেন, মাসের শুরু হওয়ায় অনেকেই এখনো বাজারে আসেননি। তবে ঈদের আগের দুই–তিন দিনে বাজার জমে উঠবে বলে তারা আশা করছেন।

প্রতি বছর কোরবানির এক মাস আগে থেকে চট্টগ্রামের বৃহত্তর পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে মসলাজাতীয় পণ্যের কেনাবেচা বেড়ে যায়। কিন্তু এবার ক্রেতা কম। ফলে দামও নিয়ন্ত্রণে আছে।

চাক্তাই শিল্প ও ব্যবসায়ী সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহসান খালেদ বলেন, “এই বছর সরবরাহ বেশি, কিন্তু বেচাকেনা নেই। তাই দাম কমেছে। কোরবানি সামনে রেখে প্রস্তুতি থাকলেও এখনো প্রত্যাশামতো বিক্রি হচ্ছে না।”

দেশে পেঁয়াজের প্রধান উৎস মেহেরপুর, তাহেরপুরসহ উত্তরবঙ্গের জেলাগুলো। স্বাভাবিক মৌসুমে ভারত, চীন, পাকিস্তান ও মিসর থেকেও পেঁয়াজ আমদানি হয়। কিন্তু এবার বাজারে আমদানি করা পেঁয়াজের সরবরাহ প্রায় নেই বললেই চলে। গুটিকয়েক দোকানে ভারতীয় পেঁয়াজ দেখা গেলেও অধিকাংশ দোকানে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে।

চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের হামিদুল্লাহ মিঞা মার্কেটের আড়তগুলোয় বর্তমানে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫২ টাকায়। গত বছর এ সময় দাম ছিল ৬০ টাকার বেশি। ব্যবসায়ীদের মতে, চাহিদা বাড়লে দাম ২–১ টাকা বাড়তে পারে।

মার্কেটের ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইদ্রিস বলেন, “চাহিদা না থাকায় দাম কমে গেছে। তবে সরবরাহ প্রচুর আছে।”

পেঁয়াজের মতোই আদা ও রসুনের বাজারেও দাম কমেছে। রসুনের দাম গত বছরের তুলনায় কমেছে প্রায় ৩০ টাকা। আর আদার দাম কমেছে প্রায় ৭০ টাকা।

এ বছর চীনা রসুন বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১৩০ টাকায়, আর দেশি রসুন ১০০ টাকার আশপাশে। আদার ক্ষেত্রে ভারতীয় আদা ৮৫–৯০ টাকা এবং চীনা আদা ১১৫–১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশি আদার দাম ৯০ টাকার আশপাশে ঘোরাফেরা করছে।

নগরীর বিভিন্ন খুচরা বাজারে এই সব পণ্যের দাম পাইকারি দরের চেয়ে সর্বোচ্চ ১৫ টাকা বেশি।

চট্টগ্রামের বহদ্দারহাট বাজারের খুচরা বিক্রেতা মোহাম্মদ ফরিদুল হক বলেন, “এখনো ক্রেতা কম। মাসের শুরু, হয়তো অনেকেই এখনও কেনাকাটায় নামেননি। তবে ঈদের আগের দুই–তিন দিনে বাজার জমে উঠবে।”