
প্রতিবেদক: প্রায় এক দশক পর সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য নতুন বেতন কাঠামো নির্ধারণে জাতীয় বেতন কমিশন গঠন করেছে সরকার। এই কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন সাবেক অর্থসচিব ও পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান জাকির আহমেদ খান। কমিশনকে প্রথম সভা আয়োজনের পর ছয় মাসের মধ্যে সুপারিশসহ চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
রোববার অর্থ মন্ত্রণালয় এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে কমিশনের সদস্যদের নাম ও দায়িত্ব নির্ধারণ করে। বর্তমানে দেশে প্রায় ১৫ লাখ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন। তাঁদের জন্য সময়োপযোগী বেতন কাঠামো প্রণয়নের লক্ষ্যেই এই কমিশন গঠন করা হয়েছে। কমিশন জাতীয় বেতন স্কেলের আওতাভুক্ত সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বিশ্ববিদ্যালয় ও শিল্পপ্রতিষ্ঠানের বেতন, ভাতা ও অন্যান্য আর্থিক সুবিধা পর্যালোচনা করে সুপারিশ দেবে।
কমিশনের কাজের পরিধিতে রয়েছে সময়োপযোগী ও বিশেষায়িত চাকরির জন্য আলাদা বেতন কাঠামো প্রণয়ন, আয়কর বিবেচনায় বেতন নির্ধারণ, বাড়িভাড়া, চিকিৎসা ও যাতায়াত ভাতা নিরূপণ, মূল্যস্ফীতি অনুযায়ী বেতন সমন্বয়, অবসর–সুবিধা ও পেনশন কাঠামো নির্ধারণ, বেতন গ্রেড ও ইনক্রিমেন্টে অসংগতি দূরীকরণ এবং টেলিফোন, মোবাইল, গাড়ি ও রেশন–সুবিধার যৌক্তিকীকরণ।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, কমিশন সুপারিশ প্রণয়নের সময় একটি পরিবারের (পিতা-মাতাসহ অনধিক ছয়জন) জীবনযাত্রার ব্যয়, দুই সন্তান পর্যন্ত শিক্ষাব্যয় ও চিকিৎসা ব্যয়, দেশের সার্বিক আর্থিক অবস্থা, সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের আয়–ব্যয় এবং দক্ষ জনবল ধরে রাখার বিষয়গুলো বিবেচনায় নেবে।
কমিশনের পূর্ণকালীন সদস্য হিসেবে রয়েছেন সাবেক সচিব মোহাম্মদ আলী খান, সাবেক হিসাব মহানিয়ন্ত্রক মোসলেম উদ্দীন এবং সাবেক রাষ্ট্রদূত ফজলুল করিম। খণ্ডকালীন সদস্য হিসেবে রয়েছেন সাবেক মহা হিসাব নিরীক্ষক আহমেদ আতাউল হাকিম, সাবেক সরকারি কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহিদ হোসাইন, সাবেক সচিব জিশান আরা আরাফুন্নেসা, মেজর জেনারেল (অব.) এ আই এম মোস্তফা রেজা নূর, বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর হাবিবুর রহমান, সাবেক গ্রেড-১ কর্মকর্তা তহমিনা বেগম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মাকছুদুর রহমান সরকার, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সামছুল আলম ভূঁইয়া, বুয়েটের অধ্যাপক এ কে এম মাসুদ, বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক সৈয়দ আতিকুল হক এবং বিআইডিএস মহাপরিচালক এ কে এনামুল হক।
এ ছাড়া প্রতিরক্ষা, আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক, জনপ্রশাসন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে একজন করে প্রতিনিধি, ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএবি) এবং ব্যবসায়ী সংগঠন এফবিসিসিআই-এর সভাপতিকেও কমিশনের খণ্ডকালীন সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। অর্থ বিভাগ থেকে দুজন অতিরিক্ত সচিব এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে একজন সচিব বা অতিরিক্ত সচিবকে পূর্ণকালীন সদস্য করা হবে। প্রয়োজনে কমিশন অন্য কাউকে সদস্য হিসেবে কো-অপ্ট করতে পারবে বলেও প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।