এনবিআর নিয়ে নেতিবাচক রিপোর্টে আইএমএফ-ওয়ার্ল্ড ব্যাংকে চিঠি লিখতে হয়েছিল: অর্থ উপদেষ্টা

প্রতিবেদক: জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) নিয়ে নেতিবাচক সংবাদ প্রকাশের পর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ও বিশ্বব্যাংকের কাছে ব্যক্তিগতভাবে ব্যাখ্যামূলক চিঠি লিখতে হয়েছিল বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, এনবিআর–সংক্রান্ত প্রতিবেদন ঘিরে বড় ধরনের ঝামেলা তৈরি হয়েছিল। এমন প্রেক্ষাপটে তিনি মত প্রকাশ করেন—‘ইতিবাচক সংবাদ দিলে কিছুটা সুবিধা হয়, নেতিবাচক সংবাদে জটিলতা বাড়ে।

আজ বুধবার রাজধানীর পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) ও এসএমই ফাউন্ডেশনের যৌথ আয়োজনে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত ‘এসএমই ফাউন্ডেশন–ইআরএফ মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড ২০২৫’ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, এনবিআর–সংক্রান্ত নেতিবাচক সংবাদ আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকের দৃষ্টিগোচর হলে তিনি নিজেই তাদের চিঠি লেখেন। প্রথমে অর্থসচিবের পাঠানো চিঠিকে গুরুত্ব না দিয়ে বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট সরাসরি অর্থ উপদেষ্টার চিঠি চান। পরে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া সম্ভব হলেও তখন বড় রকমের অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছিল বলে জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, ‘এখন তো টাকা আসছে। আমরা চেষ্টা করছি, এই অর্থ যেন সৎভাবে ব্যবহার হয়। অনেকে বাজেট ছোট বলে অভিযোগ করেন, কিন্তু আগে বরাদ্দ ফুলিয়ে দেখানো হতো।’

অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন বলেন, চলতি সময়ের মধ্যে (ডিসেম্বরের মধ্যে) মৌলিক কিছু অর্থনৈতিক সংস্কার বাস্তবায়ন করা হবে। ইতিমধ্যে সেই কাজ শুরু হয়েছে। ব্যাংক খাতের সংস্কারে কিছুটা সময় লাগবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। পাশাপাশি মন্তব্য করেন, পরবর্তী সরকার এই সংস্কার অব্যাহত না রাখলে জনগণই তাদের জবাব দেবে।

অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, ‘অনেকে বলেন, সরকারের কোনো ভালো কাজ চোখে পড়ে না। অথচ দেশে অনেক কিছুই হচ্ছে। বিশেষ কিছু মানুষকে সুবিধা দেওয়া হলে তারা ঠিকই কাজ দেখতে পেতেন।’

এসএমই খাতের প্রসঙ্গে এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন মো. মুসফিকুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের জিডিপিতে এসএমই খাতের অবদান এখন ২৫ শতাংশ, যা ভারতের মতো দেশে ৪০ থেকে ৬০ শতাংশ। আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে এই খাতের অবদান ৩৫ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।

এ বছর এসএমই ফাউন্ডেশন–ইআরএফ মিডিয়া অ্যাওয়ার্ডে ২১ জন সাংবাদিককে ১০টি শ্রেণিতে পুরস্কৃত করা হয়। মোট ৮২টি প্রতিবেদন জমা পড়ে। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ইআরএফ সভাপতি দৌলত আকতার মালা, সাধারণ সম্পাদক মো. আবুল কাশেম, এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনোয়ার হোসেন চৌধুরী প্রমুখ।

পুরস্কারের জন্য মনোনীত প্রতিবেদনের মধ্যে ছিল—এসএমই খাতে অর্থায়ন সংকট, রপ্তানি সম্ভাবনা, বাজেট ও নীতিগত সহায়তা, বাজারজাতকরণ চ্যালেঞ্জ, গবেষণার গুরুত্ব, ক্লাস্টারভিত্তিক উন্নয়ন, কর্মসংস্থান, নারীর অংশগ্রহণ এবং প্রযুক্তি ব্যবহারের বিষয়গুলো। বিচারক হিসেবে ছিলেন সম্পাদক, গণযোগাযোগ বিভাগের শিক্ষক এবং এসএমই ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তারা।