
প্রতিবেদক: শীর্ষ আমদানিকারক দেশগুলোতে ছুটি ও মার্কিন সহায়তা কমে যাওয়ায় ২০২৫ সালের এপ্রিলে বাংলাদেশের ওষুধ রপ্তানি উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। তবে চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে এই খাতে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের এপ্রিলে বাংলাদেশ ১১ দশমিক ৯৪ মিলিয়ন ডলারের ওষুধ রপ্তানি করেছে, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩৪ দশমিক ২৫ শতাংশ কম। ২০২৪ সালের এপ্রিলে এই পরিমাণ ছিল ১৮ দশমিক ১৬ মিলিয়ন ডলার।
তবে জুলাই ২০২৪ থেকে এপ্রিল ২০২৫ পর্যন্ত ১০ মাসে ওষুধ রপ্তানি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭৭ দশমিক ৪২ মিলিয়ন ডলারে, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ১৭১ দশমিক ৪৯ মিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ এই সময়কালে তিন দশমিক ৪৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে।
ওষুধ খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, এপ্রিলের রপ্তানি কমে যাওয়া দীর্ঘমেয়াদি দুর্বলতার ইঙ্গিত নয় বরং এটি সাময়িক পরিস্থিতির প্রতিফলন। বিভিন্ন দেশে ছুটির কারণে কার্যাদেশ বিলম্ব, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে মুদ্রানীতিগত সংকোচন, এবং সরবরাহব্যবস্থার বাধাই এই পতনের পেছনে প্রধান কারণ।
বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী নওয়াজ বলেন, “এপ্রিলের পরিসংখ্যান কিছুটা উদ্বেগজনক হলেও সামগ্রিকভাবে রপ্তানি ইতিবাচক ধারায় রয়েছে। আমাদের প্রবৃদ্ধি স্থিতিশীল।”
তবে ইনসেপটা ফার্মাসিউটিক্যালস সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক আরেফিন আহমেদ। তিনি বলেন, “ফেব্রুয়ারি থেকে ইউএসএআইডি’র তহবিল কমে যাওয়ায় আমাদের বড় অর্ডার বাতিল করতে হয়েছে, যার মধ্যে দুটি ভ্যাকসিন চালানও ছিল। আগে প্রতি মাসে অন্তত ১০ কোটি টাকার ওষুধ কিনত তারা।”
স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম জানান, আন্তর্জাতিক বাজারে স্কয়ারের চাহিদা বাড়ছে। “আমাদের রপ্তানি আদেশ ভালো। বিশ্ববাজার থেকে ভালো সাড়া পাচ্ছি,” বলেন তিনি।
বিকন ফার্মাসিউটিক্যালসের সহযোগী প্রতিষ্ঠান বিকন মেডিকেয়ারের প্রধান নির্বাহী মঞ্জুরুল আলম বলেন, “এপ্রিলের মতো এক-দুই মাসের পতনে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। বছরের শুরুতে সাধারণত রপ্তানি কিছুটা ধীর হয়। এটা ক্ষণিকের মন্দা মাত্র।”
তিনি আশা প্রকাশ করেন, কার্যাদেশ ফিরতে শুরু করায় বাজার দ্রুত ঘুরে দাঁড়াবে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, পরিমাণে কম হলেও বাংলাদেশের ওষুধ রপ্তানি বিশ্ব বাজারে দেশের ভাবমূর্তি ও শিল্পের সম্ভাবনা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।