এবি ব্যাংকের ১,৯০৬ কোটি টাকার লোকসান, লভ্যাংশ দেবে না

প্রতিবেদক: প্রথম প্রজন্মের ব্যাংক এবি ব্যাংক ২০২৪ সালে বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে। ব্যাংকটির নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনে দেখা যায়, গত বছর তাদের সমন্বিত লোকসান হয়েছে ১,৯০৬ কোটি টাকা। এ কারণে এবি ব্যাংক লভ্যাংশ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ২০২৪ সালে শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ২১ টাকা ২৮ পয়সা, যেখানে আগের বছর শেয়ারপ্রতি আয় ছিল ১ টাকা। ২০২৩ সালে ব্যাংকটির মোট মুনাফা ছিল ৯০ কোটি টাকা। এছাড়া গত বছর শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থপ্রবাহ ছিল মাইনাস ৪২ টাকা ২৩ পয়সা, যেখানে আগের বছর তা ছিল ১০ টাকা ৯৮ পয়সা। ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪ পর্যন্ত ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য দাঁড়িয়েছে মাত্র ৭ টাকা ১৯ পয়সা।

আগামী ৫ আগস্ট সকাল ১০টায় এবি ব্যাংকের বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হবে হাইব্রিড পদ্ধতিতে, যার রেকর্ড তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ২৬ জুন। এক সময় গ্রাহকসেবায় উৎকর্ষ এনে এবি ব্যাংক ছিল অন্যতম সফল একটি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু পরে শীর্ষ কর্মকর্তাদের অনিয়ম, দুর্নীতি এবং উদ্যোক্তাদের অনৈতিক প্রভাব ব্যাংকটির ভীত নাড়িয়ে দেয়। বিশেষ করে খেলাপি ঋণ ব্যাপকভাবে বেড়ে যাওয়ায় আর্থিক সংকট চরমে পৌঁছায়। যদিও দীর্ঘদিন বাংলাদেশ ব্যাংকের পর্যবেক্ষক নিয়োজিত ছিল, তবু ব্যাংকের অবস্থার উন্নতি হয়নি।

ব্যাংকটির অন্যতম উদ্যোক্তা সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এম মোরশেদ খান। প্রতিষ্ঠার পর থেকে ব্যাংকটি তাঁর পরিবারের নিয়ন্ত্রণে। তাঁর ঘনিষ্ঠজন ওয়াহিদুল হক, সাবেক ডেপুটি গভর্নর মোহাম্মদ এ (রুমী) আলী এবং জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খায়রুল আলম চৌধুরী ব্যাংকটির চেয়ারম্যান ছিলেন, তবে কেউই উন্নতি ঘটাতে পারেননি। বর্তমানে চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ব্যাংকের সাবেক এমডি কাইজার এ চৌধুরী।

এবি ব্যাংকের বড় ঋণগ্রহীতাদের মধ্যে অনেকেই নিয়মিত ঋণ পরিশোধ করছেন না। এর মধ্যে রয়েছে সিকদার গ্রুপ, আশিয়ান সিটি, বিল্ডট্রেড, মাহিন গ্রুপ, আমান গ্রুপ, এরশাদ ব্রাদার্স এবং আলোচিত ঠিকাদার মিঠুর মালিকানাধীন কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। এছাড়াও বেক্সিমকো গ্রুপ এবং মোরশেদ খানের মালিকানাধীন বন্ধ হওয়া মোবাইল অপারেটর সিটিসেলের ঋণও আদায় করতে পারছে না ব্যাংকটি। ফলে এই ব্যাংক সুদের আয় দিয়ে আমানতকারীদের সুদ পরিশোধ করতেও হিমশিম খাচ্ছে।