এলএনজি আমদানিতে আন্তর্জাতিক দর যাচাই করা হয়: অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন

প্রতিবেদক: অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি করা হয় আন্তর্জাতিক বাজারদর যাচাই করে। কোনো একক উৎস নয়, বরং বিভিন্ন উৎস থেকে এলএনজি আনা হচ্ছে।

মঙ্গলবার সচিবালয়ে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

সাংবাদিকদের প্রশ্ন ছিল—এলএনজি আমদানিতে বাংলাদেশে নিযুক্ত সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাসের কোম্পানিকে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে কি না। জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরব, চীন বা সিঙ্গাপুর—যে দেশ থেকেই আমদানি করা হোক না কেন, তুলনামূলক দর দেখা হয়। এত সহজ নয় যে, যুক্তরাষ্ট্রের কোনো কোম্পানিকে সরাসরি কাজ দিয়ে দেওয়া হবে।

তিনি আরও জানান, পিটার হাস কোন কোম্পানির সঙ্গে যুক্ত আছেন, তা তিনি ভালো করে জানেনও না।
উল্লেখ্য, গত বছরের সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে মার্কিন বহুজাতিক কোম্পানি অ্যাকসিলারেট এনার্জির স্ট্র্যাটেজিক উপদেষ্টা পদে যোগ দেন পিটার ডি হাস। প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ এলএনজি সরবরাহকারী। বর্তমানে বাংলাদেশ ২৩টি কোম্পানি থেকে এলএনজি আমদানি করছে, যার মধ্যে অ্যাকসিলারেটও রয়েছে।

বৈঠকে সিঙ্গাপুর থেকে এক কার্গো এলএনজি আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ৪৯৯ কোটি ১৭ লাখ টাকা। কাজটি পেয়েছে সিঙ্গাপুরের আরামকো ট্রেডিং।
এক কার্গো সমান ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি, যেখানে প্রতি এমএমবিটিইউর দাম পড়ছে ১১ দশমিক ৮৮ ডলার।

কর্মসংস্থান প্রসঙ্গে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, কর্মসংস্থান এখন বড় চ্যালেঞ্জ। কর্মসংস্থান হয় বেসরকারি খাতের মাধ্যমে, আর ব্যবসা-বাণিজ্য মন্থর হলে এর প্রভাব পড়ে কর্মসংস্থানে। কিছুদিন ব্যবসা ধীর ছিল, তবে এখন কিছুটা ভালো হচ্ছে।

বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ঘাটতি কমাতে কী পণ্য আমদানি করা যায়, তা দেখছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এতে ভালো অবস্থানে আছে বাংলাদেশ। তবে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বেশি আমদানি করলে খরচ কিছুটা বাড়বে, কিন্তু মানের দিক থেকে তা লাভজনক হবে। যেমন—যুক্তরাষ্ট্র থেকে গম আনলে খরচ বেশি হলেও মান ভালো।

সার আমদানিতে দুর্নীতির অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে দ্রুত কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হবে না, কারণ কৃষি ও শিল্প মন্ত্রণালয় মূলত সার আমদানির দায়িত্বে রয়েছে।

অর্থ উপদেষ্টা জানান, সরকার অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফেরাতে কাজ করছে এবং কর আদায় বাড়ানোর চেষ্টা করছে। এনবিআর এখন কর ফাঁকির ঘটনা উদ্‌ঘাটন করছে, অনেক ফাইল যাচাই-বাছাই করছে এবং ব্যবস্থা নিচ্ছে। রাজনৈতিক কারণে আগে রাজস্ব আয় কম থাকলেও এখন তা বাড়ছে।

তিনি আরও বলেন, দেশের আমদানি, রপ্তানি ও স্থানীয় সরবরাহব্যবস্থা স্বাভাবিক রয়েছে। তবে পাইকারি ও খুচরা বাজারে কিছু সমস্যা আছে, যা প্রায়ই অর্থনৈতিক যুক্তির বাইরে চলে যায়।