এশিয়ায় টেকসই ধান উৎপাদনে এডিবি–সিজিআইএআরের উদ্যোগ

প্রতিবেদক: এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) এবং কনসাল্টেটিভ গ্রুপ অন ইন্টারন্যাশনাল এগ্রিকালচারাল রিসার্চ (সিজিআইএআর) টেকসই ও স্বল্প-কার্বন নির্গমনভিত্তিক ধান উৎপাদনে বিনিয়োগ বৃদ্ধির একটি নতুন উদ্যোগ চালু করেছে। এই উদ্যোগের লক্ষ্য এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের লাখো দরিদ্র কৃষকের জীবনমান উন্নত করা। বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন এ কর্মসূচিতে সহায়তা দিচ্ছে।

সোমবার এডিবির প্রধান কার্যালয় থেকে প্রকাশিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ উদ্যোগের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করা হয়। প্রথম ধাপে বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ফিলিপাইন, কম্বোডিয়া ও চীনে প্রকল্প বাস্তবায়ন শুরু হবে।

সিজিআইএআর একটি বৈশ্বিক গবেষণা অংশীদারত্ব, যা কৃষি গবেষণা ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে দারিদ্র্য হ্রাস, খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণের লক্ষ্যে কাজ করে। জলবায়ু সংকটের প্রেক্ষাপটে খাদ্য, ভূমি ও পানি ব্যবস্থার রূপান্তর এই সংস্থার মূল লক্ষ্য। বিভিন্ন দেশের সরকার, উন্নয়ন সংস্থা, দাতব্য প্রতিষ্ঠান ও গবেষণা সংস্থা সিজিআইএআরের সদস্য।

এডিবি জানিয়েছে, চাল এ অঞ্চলের মানুষের প্রধান খাদ্য। প্রতিদিন অর্ধেকের বেশি মানুষের খাদ্য এবং লাখ লাখ দরিদ্র পরিবারের জীবিকার অন্যতম প্রধান উৎস ধান। তবে উৎপাদন কমে যাওয়া, পানি সংকট এবং গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনের কারণে ধান চাষ আজ নানা সংকটে রয়েছে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা না করা গেলে ভবিষ্যতে খাদ্য নিরাপত্তা ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর কল্যাণ হুমকির মুখে পড়তে পারে।

এডিবির ভাইস প্রেসিডেন্ট (সেক্টর ও থিম) ফাতিমা ইয়াসমিন বলেন, “চাল শুধু খাদ্য নয়, এটি এ অঞ্চলের কোটি কোটি মানুষের জীবিকা। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশগত অবনতি এই জীবিকাকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে। নতুন এ উদ্যোগের মাধ্যমে সহনশীল, উচ্চফলনশীল ও স্বল্প নির্গমনযুক্ত কৃষি প্রযুক্তি, টেকসই পানি ব্যবস্থাপনা, অন্তর্ভুক্তিমূলক বাজার ব্যবস্থা এবং পুষ্টির উন্নয়নে অগ্রগতি হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, ২০২৫ থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে এ কর্মসূচিতে সর্বোচ্চ ১৫০ কোটি ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১৮ হাজার কোটি টাকা) বিনিয়োগ করবে এডিবি। এর লক্ষ্য হলো টেকসইভাবে উৎপাদন বাড়ানো, জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাওয়ানো এবং পানি ও কার্বন ব্যবহার হ্রাস করা। এ উদ্যোগটি ২০৩০ সালের মধ্যে খাদ্য ব্যবস্থার রূপান্তরের লক্ষ্যে ঘোষিত এডিবির ৪ হাজার কোটি ডলারের বৃহত্তর প্রতিশ্রুতির অংশ।

ইন্টারন্যাশনাল রাইস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ইয়ভোন পিন্টো বলেন, এই যৌথ উদ্যোগ এডিবি ও সিজিআইএআরের মধ্যে কৌশলগত অংশীদারিত্বকে আরও মজবুত করবে। এর মাধ্যমে ধানসহ অন্যান্য ফসলেও উদ্ভাবনী সমাধান ছড়িয়ে দেওয়া সম্ভব হবে। আমরা বিশ্বাস করি, এডিবি ও গেটস ফাউন্ডেশনের মতো অংশীদারদের সহায়তায় এশিয়ায় ধান উৎপাদনে টেকসই ও সহনশীল রূপান্তর সম্ভব, যা লাখ লাখ কৃষকের জীবনকে ইতিবাচকভাবে প্রভাবিত করবে।”