
প্রতিবেদক: বিশ্ববিখ্যাত বিনিয়োগকারী ও উদ্যোক্তা ওয়ারেন বাফেট বার্কশায়ার হ্যাথাওয়ের প্রধান নির্বাহী পদ থেকে অবসর নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। ৯৪ বছর বয়সী বাফেট জানিয়েছেন, ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ তিনি দায়িত্ব ছাড়বেন এবং কোম্পানির ভাইস চেয়ারম্যান গ্রেগ অ্যাবেল নতুন সিইও হিসেবে দায়িত্ব নেবেন। খবর রয়টার্স।
৬০ বছরের নেতৃত্বের অবসান ঘটিয়ে বাফেট বলেন, “আমি মনে করি গ্রেগের এখন কোম্পানির প্রধান নির্বাহী হওয়ার সময় হয়েছে। আমি পাশে থাকব এবং কয়েকটি বিষয়ে সহায়তা করব, তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রেগই নেবে।”
একটি ব্যর্থ টেক্সটাইল কোম্পানিকে প্রায় ১.১৬ ট্রিলিয়ন ডলারের কনগ্লোমারেটে রূপান্তরিত করে বাফেট আজকের দিনে কেবল শেয়ারবাজারের কিংবদন্তি নন, বরং আমেরিকান উদ্যোক্তাদের অনুপ্রেরণার প্রতীক। জেপি মরগানের সিইও জেমি ডিমন বলেন, ওয়ারেন বাফেট হচ্ছেন আমেরিকান পুঁজিবাদের এবং আমেরিকার সবচেয়ে ভালো দিকগুলোর প্রতীক।” অ্যাপলের সিইও টিম কুক এক্স-এ লিখেছেন, “ওয়ারেনের মতো আর কেউ নেই।
বাফেট নিশ্চিত করেছেন, তিনি তার বার্কশায়ার শেয়ারের একটিও বিক্রি করবেন না এবং মৃত্যুর পর সেগুলোর প্রায় সবই দান করবেন। বর্তমানে তার সম্পদের পরিমাণ ১৬৮.২ বিলিয়ন ডলার, যার প্রায় পুরোটাই বার্কশায়ারের শেয়ারে।
নতুন সিইও গ্রেগ অ্যাবেল ২০১৮ সাল থেকে কোম্পানির ভাইস চেয়ারম্যান এবং ২০২১ সাল থেকে বাফেটের উত্তরসূরি হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছেন। যদিও বাফেটের মতো তিনি গণমাধ্যমে খুব একটা আসবেন না, তবে বার্কশায়ারের সংস্কৃতি রক্ষা ও টেকসই প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করাই হবে তার মূল দায়িত্ব।
ওমাহাভিত্তিক বার্কশায়ার হ্যাথাওয়ের অধীনে বর্তমানে প্রায় ২০০টি ব্যবসা রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে গেইকো ইন্স্যুরেন্স, বিএনএসএফ রেলরোড, ডেইরি কুইন আইসক্রিম এবং ফ্রুট অব দ্য লুম। শেয়ারবাজারেও কোম্পানিটির বিশাল বিনিয়োগ রয়েছে অ্যাপল, আমেরিকান এক্সপ্রেস এবং ব্যাংক অব আমেরিকার মতো প্রতিষ্ঠানে।
‘ওমাহার ওরাকল’ নামে পরিচিত বাফেট ছিলেন বিনিয়োগ গুরু বেনজামিন গ্রাহামের ছাত্র। তিনি মৌলিক বিশ্লেষণ ও যুক্তিসঙ্গত দামে শেয়ার কেনার দর্শনে বিশ্বাসী ছিলেন। তার এই কৌশলের ভিত্তিতেই ১৯৬৫ সাল থেকে বার্কশায়ার হ্যাথাওয়ের শেয়ার মূল্য ৫৫ লাখ শতাংশের বেশি বেড়েছে।