
প্রতিবেদক: গত সপ্তাহান্তে মার্কিন কোম্পানি বার্কশায়ার হ্যাথাওয়ের বার্ষিক সভা এক বিশাল সমাবেশে পরিণত হয়। সভার আগে ও মূল সভায় শেয়ারহোল্ডাররা কোম্পানির কিংবদন্তি প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ওয়ারেন বাফেটের সই করা স্মৃতিচিহ্ন কিনতে মরিয়া হয়ে ওঠেন। ‘বিনিয়োগ গুরু’খ্যাত বাফেটের স্বাক্ষরিত এসব বস্তু নিলামে বিক্রি হয়। এই নিলামের মধ্যে একটি বই সর্বোচ্চ এক লাখ ডলারে বিক্রি হয়।
নিলামের অর্থ ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে স্থানান্তর করা হয় এবং অনেক চেকও ডাকযোগে আসে। তবে এটি ছিল বাফেটের চিরাচরিত দানশীলতার একটি উদাহরণ। নিলাম থেকে প্রাপ্ত অর্থ বাফেটের জন্মস্থান ওমাহার স্থানীয় মানুষদের সেবায় ব্যয় করা হবে।
এই বার্ষিক সভায় অংশগ্রহণকারীরা ‘সিক্সটি ইয়ার্স অব বার্কশায়ার হ্যাথাওয়ে’ বইটি কেনার সুযোগ পান। বইটির ১৮টি কপি নিলামে তোলা হয় এবং এগুলোর মধ্যে কিছু কপি বাফেট ও লেখক ক্যারি সোভারের স্বাক্ষরিত ছিল। এই অর্থ বাফেটের প্রতিষ্ঠিত স্টিফেন সেন্টারের উন্নয়নে ব্যয় করা হবে। এটি মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র হিসেবেও কাজ করে এবং স্থানীয় জনগণের সেবায় নিয়োজিত।
নিলামটি দুটি ধাপে অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম ধাপে অনলাইনে আটটি বইয়ের নিলাম হয়, যেখানে সর্বোচ্চ দর ওঠে এক লাখ ডলার। এরপর ‘বার্কশায়ার বাজার অব বার্গেইনস’ অনুষ্ঠানে আরও ১০টি বইয়ের নিলাম হয়, যার সর্বোচ্চ দর ৬০ হাজার ডলার।
এর পাশাপাশি, ওয়ারেন বাফেট তার ব্যবসায়িক অংশীদার প্রয়াত চার্লি মাঙ্গারের স্মরণে বিশেষ সই করা আরও দুটি বই রাখেন।
নিলামে বিজয়ী একজন ছিলেন ৪৩ বছর বয়সী ম্যাথিউ রড্রিগেজ, যিনি আবাসন খাতের কর্মী। তিনি ৫০ হাজার ডলার খরচ করে একটি বই কিনে বলেন, ‘এটি আমার লাইব্রেরির অমূল্য নিদর্শন হবে।’
স্টিফেন সেন্টারের সিইও ক্রিস নফ জানান, এই অবিশ্বাস্য উদারতার জন্য তিনি অত্যন্ত কৃতজ্ঞ। উত্থিত অর্থের কিছু অংশ মাদক নিরাময় কেন্দ্রের ঘরোয়া সংস্কারের জন্য এবং বাকিটা মহিলা ও শিশুদের কেন্দ্র নির্মাণে ব্যয় করা হবে।
ওয়ারেন বাফেট শুধু একটি ব্যবসায়ী নয়, তিনি তার দানধ্যানের জন্যও সুপরিচিত। ২০০৬ সাল থেকে তিনি তার বিপুল সম্পদ জনহিতকর কাজে দান করে আসছেন। বিল গেটসের সহায়তায় ‘দ্য গিভিং প্লেজ’ প্রতিষ্ঠা করে তিনি অন্যান্য ধনীদেরও দানের জন্য উৎসাহিত করেছেন। বাফেট ইতোমধ্যে তার সম্পদের ৯৯ শতাংশ দান করার ঘোষণা দিয়েছেন এবং তার মৃত্যুর পর সেই দান অব্যাহত রাখার পরিকল্পনা করেছেন।
এখনও পর্যন্ত, বাফেটের দানে বিশ্বের নানা জায়গায় নানা উদ্যোগ চলছে এবং তাঁর সম্পদ কীভাবে দান করা হবে সে বিষয়ে বিস্তারিত পরিকল্পনা করে রেখেছেন।