কনটেইনার পরিবহনে রেকর্ড, চট্টগ্রাম বন্দরে সর্বোচ্চ ৩২ লাখ ৯৬ হাজার ইউনিট

প্রতিবেদক: দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর চট্টগ্রাম বন্দর পণ্য রপ্তানি বৃদ্ধির ধারায় ও আমদানিতে স্বাভাবিকতা ফেরার প্রেক্ষাপটে কনটেইনার পরিবহনে ইতিহাস গড়েছে। সদ্য শেষ হওয়া ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বন্দরের মাধ্যমে পরিবহিত হয়েছে ৩২ লাখ ৯৬ হাজার একক কনটেইনার (টিইইউস্)—যা গত ৪৮ বছরের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।

এর আগে সর্বোচ্চ রেকর্ড ছিল ২০২১-২২ অর্থবছরে, তখন পরিবহিত হয়েছিল সাড়ে ৩২ লাখ কনটেইনার। সেই রেকর্ড এখন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। তৃতীয় সর্বোচ্চ ছিল ২০২৩-২৪ অর্থবছরে, যখন পরিবহনের পরিমাণ ছিল ৩১ লাখ ৬৮ হাজার ইউনিট। অর্থাৎ, এক বছরের ব্যবধানে কনটেইনার পরিবহন বেড়েছে প্রায় ৪ শতাংশ।

চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব ওমর ফারুক বলেন, “অর্থবছরের শেষ দিকে কাস্টমস শাটডাউন ও আন্দোলন কর্মসূচি না হলে কনটেইনার পরিবহন আরও বাড়তে পারত। তারপরও সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা এই রেকর্ড অর্জন করতে পেরেছি।”

চট্টগ্রাম বন্দরের এই কনটেইনার পরিবহন কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে চারটি টার্মিনাল, কমলাপুর কনটেইনার ডিপো, ও পাঁনগাঁও নৌ টার্মিনালের মাধ্যমে। এ হিসাবের মধ্যে রয়েছে আমদানি, রপ্তানি ও খালি কনটেইনার—সব মিলিয়ে।

তবে কনটেইনার পরিবহনে এই প্রবৃদ্ধির মধ্যেও গত অর্থবছর ছিল নানা প্রতিবন্ধকতায় ভরা। বছরের শুরুতে জুলাই-আগস্টে কর্মসূচি, শেষ দিকে কাস্টমসের শাটডাউন, পরিবহন ধর্মঘটসহ বিভিন্ন আন্দোলনের কারণে বন্দরের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হয়।

বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরে মোট পণ্য পরিবহনের মধ্যে ২৩ শতাংশ হচ্ছে কনটেইনার, আর ৭৭ শতাংশ হচ্ছে খোলা পণ্য, জ্বালানি, ও ভোজ্যতেল জাতীয় কনটেইনারবিহীন পণ্য। তবে, সবচেয়ে মূল্যবান ও বাণিজ্যিক পণ্য কনটেইনারেই পরিবাহিত হয়—যেমন শিল্পের কাঁচামাল, মূলধনি যন্ত্রপাতি ও রপ্তানি পণ্য।

বাংলাদেশে কনটেইনার পরিবহনের জন্য দুটি বন্দর রয়েছে—চট্টগ্রাম ও মোংলা। এর মধ্যে ৯৯ শতাংশ কনটেইনারই চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে, আর মাত্র ১ শতাংশ মোংলা বন্দরের মাধ্যমে পরিবাহিত হয়।