
অনলাইন ডেক্স:সরকারের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ক্রমশ পিছিয়ে পড়ছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) রাজস্ব ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৪২ হাজার কোটি টাকা, যা আগের মাসের চেয়ে ১০ হাজার কোটি টাকা বেশি। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) নভেম্বরেও কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় রাজস্ব আদায় করতে ব্যর্থ হয়েছে।
রাজস্ব আদায়ে লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ব্যর্থ এনবিআর সাধারণ মানুষের ওপর করের বোঝা বাড়ালেও রাজস্ব আদায় কমে গেছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে রাজস্ব আদায় গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২.৬২ শতাংশ কম। এর মধ্যে তিন মাসেই রাজস্ব আদায় কমেছে।
রাজস্ব ঘাটতি মোকাবিলায় এনবিআর সম্প্রতি ৬৭টি পণ্য ও সেবার ওপর কর বৃদ্ধি করেছে। তবে করের আওতা না বাড়িয়ে সাধারণ মানুষের ওপর করের বোঝা চাপানোয় সমালোচনা বাড়ছে।
অর্থনীতিবিদরা এবং এনবিআরের কর্মকর্তারা রাজস্ব ঘাটতির পেছনে কয়েকটি কারণ তুলে ধরেছেন:
- অর্থনীতির গতিশীলতা না ফেরা দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক মন্দার কারণে ব্যবসা-বাণিজ্য এখনও স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসেনি।
- ট্যাক্স ছাড় বেশ কিছু নিত্যপণ্যের আমদানিতে ট্যাক্স ছাড় দেওয়া হয়েছে, যা রাজস্ব আদায়ে প্রভাব ফেলেছে।
- উৎপাদন হ্রাস অনেক প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন কমে গেছে বা বন্ধ হয়ে গেছে, যার ফলে তাদের থেকে রাজস্ব আদায় কমেছে।
- সংকোচনমুখী মুদ্রানীতি সংকোচনমুখী মুদ্রানীতি বজায় থাকায় বিনিয়োগ ও ব্যবসার পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, যা রাজস্ব আদায়ে বাধা সৃষ্টি করছে।
অর্থনীতিবিদরা সংকোচনমুখী মুদ্রানীতি থেকে ধীরে ধীরে সরে আসার পরামর্শ দিয়েছেন।
ড. মাহফুজ কবির বলেন, ‘সংকোচনমুখী মুদ্রানীতি থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক সরে না এলে রাজস্ব আদায় বাড়বে না।’ তিনি বিনিয়োগ বাড়াতে ঋণের সুদের হার কমানোর তাগিদ দিয়েছেন।
বর্তমান অর্থনৈতিক বাস্তবতায় রাজস্ব ঘাটতি মোকাবিলা এবং আইএমএফের শর্ত পূরণের জন্য করের আওতা বাড়ানো ও কর ব্যবস্থাপনায় সংস্কার জরুরি। একই সঙ্গে অর্থনীতির গতি ফেরাতে বিনিয়োগবান্ধব নীতি গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছেন বিশেষজ্ঞরা।