
প্রতিবেদক: চলতি অর্থবছরের (২০২৪-২৫) প্রথম ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) কৃষি ঋণ বিতরণের পরিমাণ ২৪ হাজার ৮৬১ কোটি টাকা, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ৩ হাজার ৬৩৯ কোটি টাকা কম। এই সময়ে কৃষি ঋণের লক্ষ্য ছিল ২৮ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। তবে, ৯ মাসে দুই ব্যাংক কৃষি ঋণ বিতরণই করেনি এবং ৯টি ব্যাংক এক-তৃতীয়াংশের কম ঋণ বিতরণ করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এই চিত্র উঠে এসেছে।
বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে মোট ঋণের কমপক্ষে ২ শতাংশ কৃষি ঋণ বিতরণ করতে হয়। সেই হিসেবে, চলতি অর্থবছরে তাদের লক্ষ্য ছিল ৩৮ হাজার কোটি টাকা। তবে, জুলাই-মার্চ পর্যন্ত ৯ মাসে তারা এই লক্ষ্য অর্জন করেছে ৬৫ শতাংশ, যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ১০ শতাংশ কম। এ ক্ষেত্রে বেসরকারি ব্যাংকগুলো বিশেষভাবে পিছিয়ে রয়েছে। ১৯ হাজার ৩৯ কোটি টাকার বিপরীতে তারা বিতরণ করেছে ১৪ হাজার ৭২৭ কোটি টাকা। তবে, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো কিছুটা এগিয়ে আছে।
এ বছর শুরু থেকে সরকার পতন আন্দোলন এবং শুদ্ধি অভিযানের কারণে ব্যাংকগুলোতে ঋণের চাহিদা কম ছিল। এছাড়াও, সুদ হার বৃদ্ধি এবং টাকার প্রবাহ কমানোর বাংলাদেশ ব্যাংকের পলিসি শিল্প, ট্রেডিং, সেবাসহ অন্যান্য খাতে ঋণের প্রবাহ কমিয়ে দেয়, যার ফলে কৃষি ঋণেও ধাক্কা লাগে। তবে, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কৃষি ঋণের বৃদ্ধি নিয়ে একটি কৌশল ঠিক করা হয়েছিল, যার অংশ হিসেবে ব্যাংকগুলোর মোট বিতরণ করা ঋণের ২ শতাংশ কৃষি ঋণ হিসাবে বিতরণ বাধ্যতামূলক করা হয়।
৯ মাসে, দেশি মালিকানাধীন পদ্মা ব্যাংক এবং বিদেশি মালিকানাধীন উরি ব্যাংক কৃষি ঋণ বিতরণ শুরুই করেনি। ইউনিয়ন ব্যাংক মাত্র ৫ দশমিক ৩১ শতাংশ, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক ও আইএফআইসি ব্যাংক ১৩ শতাংশ, মধুমতি ব্যাংক ১৩ শতাংশ, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক, মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক ও সোশ্যাল ইসলাম ব্যাংক ২৩ শতাংশ এবং সাউথইস্ট ব্যাংক ১৬ শতাংশ কৃষি ঋণ বিতরণ করেছে। বিদেশি ব্যাংকগুলোর মধ্যে এইচএসবিসি ব্যাংক ৯ শতাংশ বিতরণ করেছে। তবে, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক, ব্যাংক আল ফালাহ, স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া ও হাবিব ব্যাংক ৯ মাসেই পুরো বছরের কৃষি ঋণ বিতরণ সম্পন্ন করেছে।
এছাড়া, বাংলাদেশ ব্যাংক কৃষি ঋণ বিতরণে ব্যর্থ ব্যাংকগুলোর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এবং এর ওপর নজরদারি চালাচ্ছে।