কোরবানির ঈদ সামনে, জমেনি এখনো মসলার বাজার

প্রতিবেদক: ঈদুল আজহার আর মাত্র দুই দিন বাকি। কোরবানির ঈদ সামনে রেখে বাজারে মসলার কেনাবেচা শুরু হয়ে গেলেও এবার গরমমসলার বাজার ‘ঠান্ডা’—এমনটাই বলছেন ব্যবসায়ীরা। তাঁদের ভাষায়, তুলনামূলকভাবে এবার ক্রেতার সংখ্যা অনেক কম।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত বছরের ঈদের তুলনায় বেশির ভাগ মসলার দাম কিছুটা কম। বিশেষ করে জিরা, লবঙ্গ, ধনে প্রভৃতি মসলা এবার সস্তায় বিক্রি হচ্ছে। তবে এলাচি, দারুচিনি, কাজুবাদাম ও কাঠবাদামের মতো কিছু মসলার দাম বেড়েছে। পেঁয়াজ, রসুন, আদার দামও তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল।

মসলার খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানান, দেশে মসলার বাজার অনেকটাই আমদানিনির্ভর। সাম্প্রতিক সময়ে মসলার আমদানি বেড়েছে ঠিকই, তবে বাজারে বিক্রি ও চাহিদা কম। ব্যবসায়ীদের দাবি, অধিকাংশ মসলার দাম আগেই বেড়ে যাওয়ায় ক্রেতারা চাহিদামতো কিনছেন না।

এক সময় বড় আমদানিকারকেরা বাজারে মসলা সরবরাহ করতেন, এখন অনেক খুচরা ব্যবসায়ীও সরাসরি আমদানিতে যুক্ত হয়েছেন। সেই সঙ্গে কিছু চোরাচালানি পথে আসা মসলাও বাজারে প্রভাব ফেলছে। ডলারের মূল্যবৃদ্ধি এবং আমদানি শুল্ক বৃদ্ধির কারণে খরচ বেড়েছে—যার প্রভাব পড়ছে বাজারে।

চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের মসলা ব্যবসায়ী মহিউদ্দিন বলেন, “এ বছর মসলার দাম তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল। বাজারে সরবরাহও প্রচুর। তবু এখনো কেনাবেচা জমে ওঠেনি।”

বর্তমানে বাজারে সবচেয়ে দামি মসলা হচ্ছে এলাচি। রাজধানীর মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট, টাউন হল বাজার ও কারওয়ান বাজারে প্রতি কেজি এলাচি খুচরা পর্যায়ে বিক্রি হচ্ছে ৫ হাজার থেকে ৫ হাজার ৫০০ টাকায়। পাড়া-মহল্লার দোকানে এ দাম আরও ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা বেশি। চট্টগ্রামের বাজারেও দাম প্রায় একই।

ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য বলছে, গত এক বছরে এলাচির দাম বেড়েছে ৩৩ শতাংশ।

বাংলাদেশ পাইকারি গরমমসলা ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. এনায়েত উল্লাহ বলেন, “এখন বাজারে বেশির ভাগ মসলাই উচ্চ দামে বিক্রি হচ্ছে, কিন্তু ক্রেতা কম। ফলে অনেক পাইকারি বিক্রেতা এখন দাম কমিয়ে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। মসলার দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে আমদানি শুল্ক কমানো জরুরি।”