ক্রোম বিক্রি নয়, প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে তথ্য ভাগ করতে হবে গুগলকে

প্রতিবেদক: যুক্তরাষ্ট্রের এক ফেডারেল আদালত রায়ে বলেছে, সার্চ ইঞ্জিন জায়ান্ট গুগলকে তাদের ক্রোম ব্রাউজার বিক্রি করতে হবে না। তবে প্রতিদ্বন্দ্বী কোম্পানির সঙ্গে সার্চ-সংক্রান্ত তথ্য ভাগ করতে হবে এবং একচেটিয়া চুক্তি করা যাবে না।

মার্কিন বিচার বিভাগ চেয়েছিল, গুগল ক্রোম বিক্রি করে দিক। অভিযোগ ছিল, অ্যান্ড্রয়েড ও ক্রোমের মতো পণ্য বিভিন্ন ডিভাইসে ডিফল্ট সার্চ ইঞ্জিন হিসেবে ব্যবহার করে গুগল একচেটিয়া প্রভাব বজায় রেখেছে। এর ফলে প্রতিযোগিতা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে এবং উদ্ভাবনও থমকে যাচ্ছে।

আদালত জানায়, ফোন ও ডিজিটাল যন্ত্রে নিজেদের সার্চ ইঞ্জিনকে ডিফল্ট করতে গুগল প্রতিবছর শত শত কোটি ডলার দিয়েছে অ্যাপল, স্যামসাং ও মজিলার মতো প্রতিষ্ঠানকে। শুধু ২০২১ সালেই গুগল এই উদ্দেশ্যে ব্যয় করেছে ২৬ বিলিয়ন ডলার। এখন থেকে এ ধরনের একচেটিয়া চুক্তি আর করা যাবে না।

রায়ের পর গুগল এটিকে নিজেদের বিজয় হিসেবে দেখিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির দাবি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) উত্থানের কারণে ডিজিটাল শিল্পে নতুন প্রতিযোগিতা তৈরি হয়েছে। মানুষ এখন বিভিন্ন উপায়ে তথ্য খুঁজে নিচ্ছে, ফলে একচেটিয়াত্বের অভিযোগ টেকে না। গুগলের বক্তব্য, তারা শুধু ভালো সেবা দেওয়ার কারণেই এগিয়ে আছে।

আদালতের রায়ের পর অ্যালফাবেটের শেয়ারের দাম ৮ শতাংশের বেশি বেড়েছে।

অ্যাপল, স্যামসাং ও মটোরোলার মতো কোম্পানিগুলোও সুবিধা পাবে, কারণ এখন তারা চাইলে অন্য সার্চ ইঞ্জিন বা এআই অ্যাসিস্ট্যান্ট আগে থেকেই ইনস্টল করতে পারবে।

বিশ্লেষকদের মতে, গুগল ভেঙে দিলে বিজ্ঞাপন খাতে ব্যয় কমত, ছোট কোম্পানির প্রবেশ সহজ হতো এবং নতুন অ্যাপ উদ্ভাবনের সুযোগ তৈরি হতো। তবে আপাতত সেই পরিবর্তন আসছে না।

গুগলের প্রতিদ্বন্দ্বী ডাকডাকগো অবশ্য বলছে, এই রায়ে ভোক্তাদের ক্ষতির ধারা থামবে না। তাদের মতে, গুগলের অবৈধ আচরণ বন্ধ করতে আরও কঠোর পদক্ষেপ প্রয়োজন।

এ রায়ের মধ্য দিয়ে গুগলের আইনি লড়াই শেষ হয়নি। চলতি মাসের শেষ দিকে আরেকটি মামলার শুনানি হবে, যেখানে অভিযোগ—গুগল অনলাইন বিজ্ঞাপন প্রযুক্তিতেও অবৈধভাবে একচেটিয়াত্ব ধরে রেখেছে।