ঘুরে দাঁড়াচ্ছে দেশের পুঁজিবাজার, বেড়েছে সূচক ও লেনদেন

প্রতিবেদক: দেশের পুঁজিবাজার সাম্প্রতিক পতনের ধাক্কা কাটিয়ে আস্তে আস্তে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। চলতি সপ্তাহের শুরু থেকেই বাজারে তেজিভাব দেখা যাচ্ছে, যা গতকাল বুধবারও অব্যাহত ছিল। এদিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচক ও লেনদেন—দুটোই বেড়েছে। অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ার এবং মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটের দামও বেড়েছে।

ডিএসই সূত্র জানায়, গতকাল ডিএসইএক্স সূচক ৫৩ দশমিক ৮২ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৩৫ পয়েন্টে। ডিএসই শরিয়াহ সূচক বেড়েছে ১০ দশমিক ৩৫ পয়েন্ট এবং ডিএস৩০ সূচক বেড়েছে ১৮ দশমিক ৮২ পয়েন্ট। সেই সঙ্গে লেনদেনের পরিমাণও উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। দিনশেষে ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৬৯০ কোটি ৬২ লাখ টাকার, যা আগের কার্যদিবসে ছিল ৬০১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।

গতকাল ডিএসইতে মোট ৩৯৭টি কোম্পানি ও ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ২৭৩টির দর বেড়েছে, ৭৮টির কমেছে এবং ৪৬টির দর অপরিবর্তিত ছিল। ‘এ’ ক্যাটেগরির ২১৭টির মধ্যে ১৪৭টির দর বেড়েছে, ৪৪টির কমেছে এবং ২৬টির দর অপরিবর্তিত ছিল। ‘বি’ ক্যাটেগরির ৮৩টির মধ্যে ৫৯টির দর বেড়েছে, ১৭টির কমেছে এবং ৭টির দর অপরিবর্তিত ছিল। ‘জেড’ ক্যাটেগরির ৯৭টির মধ্যে ৬৭টির দর বেড়েছে, ১৭টির কমেছে এবং ১৩টির অপরিবর্তিত।

মিউচুয়াল ফান্ড খাতেও বেশিরভাগ ফান্ডের ইউনিট দর বেড়েছে। ৩৬টি ফান্ডের মধ্যে ১৪টির দর বেড়েছে, ৭টির কমেছে এবং ১৫টির দর অপরিবর্তিত ছিল। ডিএসইতে মোট ৩০ কোটি ৯২ লাখ শেয়ার ও ইউনিট দুই লাখ আট হাজার ৯৩ বার লেনদেন হয়েছে।

চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) একই ধরনের ইতিবাচক ধারা দেখা গেছে। সেখানে মোট ২৩৩টি কোম্পানি ও ফান্ডের মধ্যে ১৫৩টির দর বেড়েছে, ৪২টির কমেছে এবং ৩৯টির দর অপরিবর্তিত ছিল। মোট লেনদেন হয়েছে ৪ কোটি ৮৩ লাখ টাকার, যা আগের দিনের তুলনায় কম (৭ কোটি ২৫ লাখ টাকা)।

গত সোমবার দেশের পুঁজিবাজারে দীর্ঘ ১১ মাস পর একটি বড় উত্থান দেখা যায়। ওই দিন ডিএসইএক্স সূচক ৮২ পয়েন্ট বেড়েছিল। এর আগে ২০২৪ সালের ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর সূচক একদিনে ৩০৬ পয়েন্ট বেড়েছিল—যা ছিল সূচক চালুর পর সর্বোচ্চ। এরপর ১১ আগস্ট সূচক আরও ৯১ পয়েন্ট বাড়ে। গত সোমবারের উত্থান সেই ধারাবাহিকতায় নতুন আশার সঞ্চার করেছে।

পুঁজিবাজার বিশ্লেষকদের মতে, সূচকের উত্থান এবং লেনদেন বৃদ্ধির এ ধারা বাজারে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ইতিবাচক মনোভাবের ইঙ্গিত দেয়। বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশা—এই ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা আগামী দিনগুলোতেও অব্যাহত থাকবে, যা বাজারের স্থিতিশীলতা এবং আস্থার ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।