চট্টগ্রামে নিজস্ব ভবন পাচ্ছে বিপিসি, অবসান ঘটছে ৩৪ বছরের অপেক্ষার

প্রতিবেদক: দেশে আমদানি করা জ্বালানি তেলের প্রায় পুরো অংশই চট্টগ্রাম দিয়ে আসে। এ কারণেই ১৯৯০ সালে দেশের জ্বালানি তেল আমদানি ও বিপণনের একমাত্র নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) সদর দপ্তর ঢাকার বদলে চট্টগ্রামে স্থানান্তর করা হয়। কিন্তু ৩৪ বছর পেরিয়ে গেলেও সংস্থাটি নিজস্ব কোনো ভবন গড়তে পারেনি। এতদিন বিপিসির কার্যক্রম চলেছে বিভিন্ন ভাড়া করা ভবনে।

তবে এবার দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটতে যাচ্ছে। বিপিসি সিদ্ধান্ত নিয়েছে, চট্টগ্রামের জামালখানের জয়পাহাড় এলাকায় সংস্থার নিজস্ব জমিতে একটি অফিস ভবন নির্মাণ করবে। ভবনটি নির্মিত হলে সেটিই হবে নতুন সদর দপ্তর। ভবিষ্যতে বাকলিয়ায় ২০ তলা ভবন নির্মাণ শেষ না হওয়া পর্যন্ত জয়পাহাড়ের ভবনেই চলবে প্রধান কার্যালয়ের কার্যক্রম।

এ বিষয়ে বিপিসির চেয়ারম্যান মো. আমিন উল আহসান জানান, পূর্বে বাকলিয়ায় ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হলেও অ্যাপ্রোচ সড়ক এবং মামলা সংক্রান্ত জটিলতার কারণে তা শুরু করা সম্ভব হয়নি। অন্যদিকে বিএসসি (বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন) তাদের ভবন সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়ায় বিপিসিকে ভাড়া করা ভবন ছেড়ে দিতে বলেছে। এই প্রেক্ষাপটে আপাতত জয়পাহাড়ের খালি জায়গায় ভবন নির্মাণ করে সেখানে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত হয়েছে।

নতুন ভবনের কাজ শুরু হয়ে গেছে। নির্মাণের দায়িত্ব পেয়েছে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর অধীনস্থ চট্টগ্রাম ড্রাই ডক লিমিটেড (সিডিডিএল)। চুক্তি অনুযায়ী ২৭ কোটি ৪ লাখ টাকায় নির্মিতব্য ভবনটি ৮ মাসের মধ্যে সম্পন্ন হবে। ১৩ মে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা কাজের অগ্রগতি পরিদর্শনে আসবেন বলে জানা গেছে। সব ঠিক থাকলে ২০২৫ সালের জানুয়ারিতেই নতুন ভবনে স্থানান্তর সম্ভব হবে।

উল্লেখ্য, ১৯৯০ সালে চট্টগ্রামে স্থানান্তরের পর প্রথমে আগ্রাবাদের হাউজ বিল্ডিং ফিন্যান্স করপোরেশনের ভবনে, পরে ২০০১ সালে বিএসসি ভবনে স্থানান্তরিত হয় বিপিসির সদর দপ্তর। ২০১৮ সালে জামালখানে নিজস্ব ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। এরপর বাকলিয়ায় ১.১৯ একর জমিতে ২০ তলা ভবনের প্রকল্প নেওয়া হলেও মামলার কারণে তা থমকে আছে।

বর্তমানে চট্টগ্রামে বিপিসির অধীনস্থ ইস্টার্ন রিফাইনারি, পদ্মা অয়েল, যমুনা অয়েল, মেঘনা পেট্রোলিয়াম, এলপি গ্যাস লিমিটেডসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান পরিচালিত হচ্ছে। নিজস্ব জমি ও বিপুল তহবিল থাকা সত্ত্বেও দীর্ঘ সময় ধরে নিজস্ব ভবন না থাকায় বিপিসির ভাবমূর্তি প্রশ্নের মুখে পড়ে। এবার জয়পাহাড়ে অস্থায়ীভাবে হলেও নিজস্ব ভবন নির্মাণের মধ্য দিয়ে সেই সংকটের অবসান ঘটছে।