চট্টগ্রামে ৭৪টি বিদেশি গাড়ির স্ক্র্যাপ বিক্রি, কেজি প্রতি দাম ২৪ টাকা ৫০ পয়সা

In বন্দর
February 12, 2025

অনলাইন ডেক্স: চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজের নিলাম শেড চত্বরে বিদেশ থেকে আমদানি করা ৭৪টি গাড়ির স্ক্র্যাপ উন্মুক্ত নিলামে বিক্রি করা হয়েছে। এসব গাড়ি কাটা এবং ভাঙারি হিসেবে বিক্রি করা হয়েছে, যার প্রতিটি স্ক্র্যাপের দাম ২৪ টাকা ৫০ পয়সা কেজি ধরা হয়েছে। নিলামটি বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) অনুষ্ঠিত হয় এবং এতে অংশ নেয় চট্টগ্রামের ১৫টিরও বেশি রি-রোলিং মিল।

নিলাম শাখার সহকারী কমিশনার মো. সাকিব হোসেন এই বিক্রির তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, “৫৮টি লটে মোট ৭৪টি গাড়ি নিলামে বিক্রির জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছিল। প্রতিটি গাড়ির স্ক্র্যাপের জন্য টন হিসেবে মূল্য ধরা হয়েছিল ৫৩ হাজার টাকা। তবে নিলামে দর উঠেছে ২৪ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত। অর্থাৎ প্রতি কেজি স্ক্র্যাপের দাম পড়েছে ২৪ টাকা ৫০ পয়সা, যার শুরু ছিল ১৩ হাজার টাকা।”

নিলাম কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারীরা গাড়ির স্ক্র্যাপ কেনার জন্য দর দিয়ে থাকেন। এসব স্ক্র্যাপের দাম কেজি অনুযায়ী নির্ধারণ করা হয়েছে এবং এটি শেষ পর্যন্ত নিলাম শর্ত অনুযায়ী রি-রোলিং মিলগুলোই কেনে, যারা প্রক্রিয়াকৃত স্ক্র্যাপ ব্যবহার করে তাদের মিলগুলোতে নতুন পণ্য উৎপাদন করতে সক্ষম।

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের মুখপাত্র ও উপ-কমিশনার মো. সাইদুল ইসলাম এই স্ক্র্যাপ বিক্রির প্রেক্ষাপট সম্পর্কে আরো বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তিনি জানান, “এই ৭৪টি গাড়ি অনেক আগেই চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছিল এবং মামলাসহ নানা আইনি জটিলতার কারণে এগুলোর চালানো সম্ভব ছিল না।” এসব গাড়ি বিক্রি করার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এর অনুমতি নিয়ে গাড়িগুলোকে স্ক্র্যাপ আকারে বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।

তিনি আরও বলেন, “মূল্যবান এই ৭৪টি গাড়ি স্ক্র্যাপ আকারে বিক্রি করতে বিডারদের কিছু অভিযোগ ছিল, তবে আইনি জটিলতার কারণে গাড়িগুলো আগে বিক্রি করা সম্ভব হয়নি। এসব গাড়ি উন্মুক্ত নিলামে বিক্রি করা হয় এবং শর্ত অনুযায়ী রি-রোলিং মিলগুলোকেই অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়া হয়।”

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের নিলাম শাখা ২০২৩ সালের ৩১ অক্টোবর গাড়িগুলোর স্ক্র্যাপ হিসেবে বিক্রি করার সুপারিশ দিয়েছিল। এরপর, ২০২৪ সালের শুরুতে এসব গাড়ি কেটে স্ক্র্যাপ আকারে বিক্রি করার প্রক্রিয়া শুরু হয়। সম্প্রতি, বন্দরে পড়ে থাকা এই গাড়ির নিলাম কার্যক্রমে গতি আসায়, গাড়িগুলোর স্ক্র্যাপ কেজি হিসেবে উন্মুক্ত নিলামে তুলে বিক্রি করা হয়।

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নিলামের পর এখন এই স্ক্র্যাপগুলো সংশ্লিষ্ট রি-রোলিং মিলগুলোতে সরবরাহ করা হবে, যেখানে সেগুলো পুনঃপ্রক্রিয়া করে বিভিন্ন নির্মাণ সামগ্রী এবং অন্যান্য পণ্য উৎপাদনে ব্যবহার হবে। এর ফলে দেশে স্ক্র্যাপ রিসাইক্লিং শিল্পের উন্নয়ন ঘটবে এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো নতুন পণ্য উৎপাদনে সক্ষম হবে।

এই বিক্রির মাধ্যমে কাস্টমস হাউস তাদের আগের বাধ্যবাধকতা পূর্ণ করতে সক্ষম হয়েছে এবং বন্দরে পড়ে থাকা অচল গাড়ি ও স্ক্র্যাপ বিক্রি হয়ে একটি কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া হলো। এর ফলে রাষ্ট্রীয় সম্পদ ব্যবহারের নতুন পথ খুলে দেওয়া হলো এবং আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে যথাযথভাবে এসব সম্পদ বিক্রির মাধ্যমে আর্থিক লাভ নিশ্চিত করা হলো।