চট্টগ্রাম বন্দরের এনসিটি ছয় মাস পরিচালনা করবে নৌবাহিনী

প্রতিবেদক: বিদেশি প্রতিষ্ঠানের কাছে হস্তান্তরের আগে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) আগামী ছয় মাসের জন্য নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত হবে। মঙ্গলবার (১ জুলাই) অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ এ তথ্য জানান।

এনসিটি পরিচালনার দায়িত্ব কাকে দেওয়া হবে, সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা রয়েছে আগামীকাল (বুধবার)। বৈঠকে অংশ নিয়ে নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন জানিয়েছেন, দরপত্র ছাড়া সরাসরি ক্রয়পদ্ধতিতে এনসিটি পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

বর্তমানে এনসিটি পরিচালনা করছে দেশীয় বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সাইফ পাওয়ারটেক লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটির চুক্তির মেয়াদ শেষ হচ্ছে ৬ জুলাই। এরপর ৭ জুলাই থেকে টার্মিনালটির দায়িত্ব বাংলাদেশ নৌবাহিনীর হাতে যেতে পারে বলে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।

টার্মিনালটি দেশের সবচেয়ে বড় কনটেইনার হ্যান্ডলিং সুবিধাসম্পন্ন স্থাপনা। এখানে পাঁচটি জেটি রয়েছে, যেখানে একসঙ্গে চারটি সমুদ্রগামী ও একটি অভ্যন্তরীণ নৌপথে চলাচলকারী জাহাজ ভিড়তে পারে। এখানে জাহাজ থেকে কনটেইনার নামানো, তোলা ও স্থানান্তরসহ গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম পরিচালিত হয়।

এর আগে গত ১৮ জুন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের এক সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছিল, বন্দর কর্তৃপক্ষ নিজেরাই এই টার্মিনাল পরিচালনা করবে। এ জন্য ছয় মাসে ৪২ কোটি টাকার প্রয়োজনীয় ব্যয়ের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। তবে পরে বন্দর এই পরিকল্পনা থেকে সরে আসে এবং নৌবাহিনীর মাধ্যমে পরিচালনার সিদ্ধান্তে আসে।

গত শনিবার চট্টগ্রাম বন্দরের সম্মেলনকক্ষে এক বৈঠকে নৌপরিবহন উপদেষ্টা ও বন্দর কর্মকর্তাদের মধ্যে এ বিষয়ে নীতিগত সমঝোতা হয়। চূড়ান্ত চুক্তি না হওয়া পর্যন্ত এই দায়িত্ব থাকবে নৌবাহিনীর ওপর।

প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালটি সংযুক্ত আরব আমিরাতভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ডিপি ওয়ার্ল্ডকে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার সেই প্রক্রিয়া আরও এগিয়ে নিচ্ছে। আশা করা হচ্ছে, চলতি বছরের নভেম্বরের মধ্যেই এই চুক্তি সম্পন্ন হবে।

এই চুক্তিতে আন্তর্জাতিক ফাইন্যান্স করপোরেশন (IFC)—বিশ্বব্যাংকের একটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান—বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে ট্রানজেকশন অ্যাডভাইজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে।