
প্রতিবেদক: চট্টগ্রাম বন্দরে আমদানি-রফতানি কার্যক্রম ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে (জুলাই-মার্চ) কার্গো, কনটেইনার এবং জাহাজ চলাচলে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে। এ সময়কালে আমদানির জন্য মোট ১৩ লাখ ২৫ হাজার ২৭৬ টিইউএস এবং রফতানির জন্য ৬ লাখ ৫০ হাজার ৯৮৮ টিইউএস কনটেইনার হ্যান্ডলিং করা হয়েছে। সব মিলিয়ে, খালি কনটেইনারসহ মোট ২৪ লাখ ৫৫ হাজার ৪৯৯ টিইউএস কনটেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে বন্দরে মোট ৯৭ লাখ ১১ হাজার ৩৬১ টন কার্গো হ্যান্ডলিং করা হয়েছে, যা আগের বছরের একই সময়ের ৯১ লাখ ৬৪ হাজার ৯৫৯ টনের তুলনায় প্রায় ৬ শতাংশ বেশি। কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ে প্রবৃদ্ধির হার ছিল প্রায় ৫ শতাংশ। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের এই সময়কালে মোট ২৪ লাখ ৫৫ হাজার ৪৯৯ টিইউএস কনটেইনার হ্যান্ডলিং করা হয়েছে, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ২৩ লাখ ৩৮ হাজার ৩৫৫ টিইউএস।
প্রবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে বন্দরে জাহাজ চলাচলও বেড়েছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে বন্দরে মোট ৩ হাজার ৫৮টি জাহাজ এসেছে, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ৩ হাজার একটি জাহাজ ছিল। অর্থাৎ, জাহাজ চলাচলে ১ দশমিক ৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
আমদানি ও রফতানি পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, আমদানিকৃত কনটেইনারের সংখ্যা রফতানির তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে আমদানিকৃত কনটেইনার ছিল ১২ লাখ ৫০ হাজার ৮৯৪ টিইউএস, আর রফতানিকৃত ছিল ৬ লাখ ৫০ হাজার ৯৮৮ টিইউএস। খালি কনটেইনারের সংখ্যা ছিল ৫ লাখ ৫৩ হাজার ৬১৭ টিইউএস। অর্থাৎ, বন্দরের আমদানির কার্যক্রম রফতানির তুলনায় দ্বিগুণের বেশি।
এই প্রবৃদ্ধি বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক ফলাফল বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব ওমর ফারুক। তিনি বলেন, বন্দরের সক্ষমতা আরো বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এছাড়া, সেবার মান বাড়ানোর জন্য অটোমেশন, ডিজিটালাইজেশন এবং গ্রিন পোর্ট বাস্তবায়নেও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হলে বন্দরের কার্গো হ্যান্ডলিং, কনটেইনার মুভমেন্ট এবং শিপিং ব্যবস্থাপনায় আধুনিকায়ন অপরিহার্য। এজন্য ভবিষ্যতে আরো বড় আকারে বাণিজ্য পরিচালনার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে। রেফার কনটেইনার ইয়ার্ড, কোল্ড স্টোরেজ, উন্নত ড্রেজিং কার্যক্রম ও টার্মিনাল সম্প্রসারণসহ বেশ কিছু প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন রয়েছে, যা সম্পন্ন হলে চট্টগ্রাম বন্দর দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম প্রতিযোগিতামূলক বাণিজ্য কেন্দ্র হয়ে উঠবে।