চট্টগ্রাম বন্দরে চার দশক পর শুল্ক বৃদ্ধি, ব্যবসায়ীদের উদ্বেগ

প্রতিবেদক: চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ (সিপিএ) প্রায় চার দশক পর প্রথম বড় ধরনের শুল্ক সংশোধন করেছে। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বন্দরের পরিষেবা চার্জ ৪১ শতাংশ বেড়ে গেছে। এটি রোববার রাতে গেজেটের মাধ্যমে প্রকাশিত হয় এবং সোমবার থেকে কার্যকর হয়েছে।

সিপিএ জানিয়েছে, আগের শুল্ক কাঠামো বর্তমান ব্যয় ও চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনার পর বাস্তবসম্মত হার নির্ধারণ করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষের দাবি, বিশ্বের অন্যান্য বন্দরের তুলনায় চট্টগ্রামে জাহাজ পরিবহন সেবা এখনও অনেক সস্তা।

তবে ব্যবসায়ী নেতারা শুল্ক বৃদ্ধিকে অযৌক্তিক বলে মন্তব্য করেছেন। বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি আনোয়ার-উল-আলম পারভেজ বলেছেন, নতুন চার্জ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের খরচ বাড়াবে এবং রপ্তানিকারকরা বৈশ্বিক বাজারে প্রতিযোগিতা হারাবেন। বিজিএমইএর সাবেক প্রথম সহ-সভাপতি নাসির উদ্দিন চৌধুরী বলেন, অদক্ষ বন্দর ব্যবস্থাপনার কারণে পণ্য ছাড়তে দেরি হচ্ছে; হঠাৎ এই শুল্ক বৃদ্ধি ব্যবসায়ীদের ওপর অনর্থক চাপ তৈরি করছে।

নতুন শুল্ক অনুযায়ী, ২০-ফুট কনটেইনারের খরচ ১১ হাজার ৮৪৯ টাকা থেকে বেড়ে ১৬ হাজার ২৪৩ টাকা হয়েছে। আমদানি কনটেইনারে খরচ বেড়েছে ৫ হাজার ৭২০ টাকা, রপ্তানি কনটেইনারে বেড়েছে ৩ হাজার ৪৫ টাকা। জাহাজ থেকে কনটেইনার লোড ও আনলোডের খরচ ৪৩ দশমিক ৪০ ডলার থেকে বেড়ে ৬৮ ডলার হয়েছে।

সিপিএ সচিব ওমর ফারুক বলেন, প্রতিবেশী দেশের তুলনায় চট্টগ্রাম বন্দরের শুল্ক এখনও কম। তবে ব্যবসায়ীরা এ বৃদ্ধি বিদেশি অপারেটরদের সুবিধা দেবে বলে সতর্ক করেছেন। বাংলাদেশ শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ এম আরিফ মন্তব্য করেছেন, বেসরকারি অফ-ডক এবং বার্থ অপারেটরদের বাড়তি চার্জ সামগ্রিক বাণিজ্য খরচ বাড়াবে এবং বিদেশি শিপিং লাইনগুলোও অতিরিক্ত চার্জ নেবে, যা দেশের বৈদেশিক বাণিজ্যকে প্রভাবিত করবে।

সিপিএ নতুন শুল্ক বাস্তবায়নের আগে ব্যবসায়ী নেতারা ধাপে ধাপে চার্জ বৃদ্ধি করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন, তবে তা গৃহীত হয়নি।