চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য পরিবহনে নতুন রেকর্ড

অনলাইন ডেক্স:নানামুখী অস্থিরতা ও সংকটপূর্ণ বছরের মধ্যেও চট্টগ্রাম বন্দর ২০২৪ সালে পণ্য পরিবহনে নতুন রেকর্ড গড়েছে। বিদায়ী বছরে বন্দর দিয়ে মোট ৩২ লাখ ৭৫ হাজার একক কনটেইনার পরিবহন হয়েছে, যা ২০২৩ সালের তুলনায় ৭.৩৬ শতাংশ বেশি। এর ফলে কনটেইনার পরিবহনে আগের সর্বোচ্চ রেকর্ড (২০২১ সালে ৩১ লাখ ১৪ হাজার একক) ভেঙে নতুন মাইলফলক অর্জিত হয়েছে।

এই রেকর্ড অর্জনের পেছনে রপ্তানি পণ্য পরিবহনের প্রবৃদ্ধি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।রপ্তানি পণ্যবাহী কনটেইনার ২০২৪ সালে পরিবহন হয়েছে ৮ লাখ ১৩ হাজার একক, যা ২০২৩ সালের তুলনায় ১৫ শতাংশ বেশি।আমদানি ও খালি কনটেইনারের প্রবৃদ্ধি তুলনামূলক কম ছিল।

রপ্তানি প্রবৃদ্ধির বড় অংশই তৈরি পোশাক খাতের। বিজিএমইএর সাবেক প্রথম সহসভাপতি এস এম নুরুল হক জানিয়েছেন, ভালো কমপ্লায়েন্স কারখানাগুলোতে ক্রয়াদেশ ও ক্রেতাদের চাহিদা বৃদ্ধির ফলে তৈরি পোশাক রপ্তানি বৃদ্ধি পেয়েছে, যা বন্দরের কনটেইনার পরিবহন বাড়ানোর প্রধান কারণ।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও বন্দরের তথ্য অনুযায়ী সমুদ্রপথে বৈদেশিক বাণিজ্যের ৮৭ শতাংশ পরিচালিত হয় চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে।কনটেইনার পরিবহনের ৯৯ শতাংশ হয় এ বন্দরের মাধ্যমে।পায়রা ও মোংলা বন্দর দিয়ে বাকি ১৩ শতাংশ পণ্য পরিবহন হয়।

 

বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামান জানিয়েছেন, ২০২৪ সালে নানা সংকট সত্ত্বেও বন্দরের কার্যক্রমে উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে।জাহাজের গড় অবস্থান সময় কমে গেছে।পণ্য খালাসের জন্য অপেক্ষার সময় এক দিনের কমে নেমে এসেছে।বেসরকারি পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল পুরোপুরি চালু হলে পরিবহন আরও বাড়বে।

২০২৪ সালে মোট পণ্য পরিবহন: ১২ কোটি ৩৯ লাখ টন (২০২৩ সালে ১২ কোটি ২ লাখ টন)।পরিবহনের প্রবৃদ্ধি ৩.১১ শতাংশ।সাধারণ পণ্য: সিমেন্ট, সিরামিকস, ইস্পাতের কাঁচামাল, পাথর, সার, ভোগ্যপণ্য, এবং জ্বালানি তেল।সাধারণ পণ্য জেটি, বিশেষায়িত জেটি ও বহির্নোঙরে খালাস করা হয়।

বন্দর ব্যবহারকারীরা আশা করছেন, পতেঙ্গা টার্মিনাল পূর্ণাঙ্গভাবে চালু হলে কনটেইনার পরিবহন আরও বৃদ্ধি পাবে। বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবস্থাপনার দক্ষতার কারণেই বৈদেশিক বাণিজ্যে খরচ কিছুটা কমেছে।

চট্টগ্রাম বন্দর ২০২৪ সালে প্রতিকূলতার মধ্যেও কার্যকরী ভূমিকা পালন করেছে, যা দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে।