
প্রতিবেদক: চট্টগ্রাম বন্দরে শুল্ক-কাস্টমস কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ‘শাটডাউন’ কর্মসূচির কারণে এক দিনে রপ্তানি কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। গত শনিবার ও রবিবার কাস্টমসের কার্যক্রম বন্ধ থাকায় বন্দর দিয়ে মোট ৩ হাজার ৬৮০ একক কনটেইনার রপ্তানি হয়নি। এসব কনটেইনারের অধিকাংশই পোশাকশিল্পের পণ্য, যা সময়মতো বিদেশি ক্রেতাদের কাছে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। বন্দরের ইতিহাসে এক দিনে এত বেশি কনটেইনার রপ্তানি বন্ধ থাকার নজির না থাকার কথাও জানা গেছে।
বন্দর সূত্রের খবর অনুযায়ী, রবিবার বন্দর জেটিতে থাকা তিনটি জাহাজ যথাযথ সময়ে রপ্তানি কনটেইনার নিয়ে বন্দরে ছাড়ার কথা ছিল। কিন্তু কাস্টমস কর্মসূচির কারণে কনটেইনার ডিপো থেকে বন্দরে পাঠানো সম্ভব হয়নি। ফলে এই তিনটি জাহাজ — ‘এএস সিসিলিয়া’, ‘এক্সপ্রেস নিলওয়ালা’ ও ‘হং ডা জিন-৬৮’–ই বন্দরে অলস হয়ে পড়ে রয়েছে।
বিশেষ করে ‘এএস সিসিলিয়া’ জাহাজটি সিঙ্গাপুরগামী ৫৬৪ একক কনটেইনার নিয়ে বন্দর ছাড়ার কথা ছিল। সিঙ্গাপুর থেকে এসব কনটেইনার ইউরোপ ও আমেরিকাগামী বড় জাহাজে তোলা হতো। কিন্তু কনটেইনার আসেনি বলে এই ব্যবস্থা ব্যাহত হচ্ছে। অন্য দুটি জাহাজে যথাক্রমে ১ হাজার ৪৬০ এবং ১ হাজার ৬৬৬ কনটেইনার বোঝাই হওয়ার কথা ছিল।
বেসরকারি কনটেইনার ডিপো সমিতির মহাসচিব রুহুল আমিন সিকদার জানান, ডিপোতে প্রতিদিন রপ্তানি পণ্যের স্তূপ বাড়ছে, কিন্তু কাস্টমস কর্মকর্তারা না আসায় শুল্কায়ন বন্ধ থাকায় কোনো কনটেইনার বন্দরে পাঠানো যাচ্ছে না। এ কারণে বন্দরে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
এনবিআরের সংস্কারের বিরোধিতায় শুরু হওয়া এই শাটডাউন কর্মসূচি দেশের সর্ববৃহৎ কাস্টমস স্টেশন চট্টগ্রাম বন্দরে সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলেছে। নতুন সংস্কার অনুযায়ী এনবিআর ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ বিলুপ্ত করে দুটি নতুন বিভাগ গঠনের পর কর্মচারীদের প্রতিবাদ শুরু হয়।
অবস্থা এমন যে, আমদানি কনটেইনার বন্দরে খালাস হচ্ছেনা, জাহাজগুলোর নিবন্ধনও হয়নি, ফলে আমদানিসহ রপ্তানিতেও বড় ধরনের অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দর সচিব মো. ওমর ফারুক প্রথম আলোকে বলেন, “কাস্টমস কর্মসূচির কারণে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে প্রভাব পড়েছে। নতুন করে কোনো কনটেইনার খালাস হয়নি, রপ্তানি কনটেইনারও ডিপো থেকে আসেনি।” এই পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে দেশের রপ্তানি খাতে বড় ক্ষতি হবে বলে সংশ্লিষ্টরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।