চট্টগ্রাম বন্দর দিয়েই বাড়ছে ভারতে পোশাক রপ্তানি

প্রতিবেদক: বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক রপ্তানি গত আগস্টে সামগ্রিকভাবে কমলেও ভারতে রপ্তানি বেড়েছে। বর্তমানে শুধুমাত্র সমুদ্রপথে চট্টগ্রাম বন্দর হয়ে ভারতে পোশাক পাঠানো সম্ভব হলেও ভারতীয় বাজারে পোশাকের চাহিদা বাড়ছে।

গত চার মাসে তিন দফায় ভারত স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশের পোশাক আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। গত ১৭ মে থেকে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়। এতে ভারতীয় ব্যবসায়ীদের স্থলবন্দর ব্যবহার করে পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করা হয়। শুধু মুম্বাইয়ের নভোসেবা ও কলকাতা বন্দর খোলা রাখা হয়। তবে নভোসেবায় পণ্য পাঠাতে হয় শ্রীলঙ্কার কলম্বো বন্দর হয়ে, ফলে এক কনটেইনার চার দফায় ওঠানো-নামানো করতে হয়। এতে খরচ ও সময় বেড়ে গেলেও শুল্কমুক্ত সুবিধার কারণে ভারতীয় ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশ থেকেই পোশাক আমদানি করছেন।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্যে দেখা যায়, আগস্টে ভারতে পোশাক রপ্তানি হয়েছে ৮ কোটি ৬ লাখ ডলারের, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ১৬ দশমিক ৫ শতাংশ বেশি। নিষেধাজ্ঞার পর তিন মাসে (জুন-আগস্ট) ভারতে পোশাক রপ্তানি হয়েছে ১৮ কোটি ৩৫ লাখ ডলারের, যেখানে গত বছর একই সময়ে রপ্তানি হয়েছিল ১৫ কোটি ৯১ লাখ ডলারের। অর্থাৎ প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ১৫ শতাংশ। বর্তমানে ভারতের বাজারে পোশাকের পুরোটা সমুদ্রপথেই যাচ্ছে। নিষেধাজ্ঞার আগে স্থলবন্দর দিয়েই যেত ৬৯ শতাংশ পোশাক, চট্টগ্রাম দিয়ে ৩০ শতাংশ এবং আকাশপথে প্রায় ১ শতাংশ।

অন্যদিকে, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্যমতে, আগস্টে মোট তৈরি পোশাক রপ্তানি কমেছে ৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ। গত মাসে পোশাক রপ্তানি হয়েছে প্রায় ৩১৭ কোটি ডলারের, যেখানে গত বছরের একই সময়ে ছিল ৩৩৩ কোটি ডলার। তবে ভারতে রপ্তানি বাড়ায় ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে ভারতে মোট রপ্তানি দাঁড়িয়েছে ৩১ কোটি ৪২ লাখ ডলারে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৪ শতাংশ বেশি।

ভারত বাংলাদেশের অষ্টম বৃহৎ রপ্তানি গন্তব্য। এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বেশি পণ্য রপ্তানি হয় ভারতেই। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে দেশটিতে প্রায় ১৮২ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছিল। এর মধ্যে তৈরি পোশাকের অংশ ৩৬ শতাংশ এবং পোশাক ছাড়া অন্যান্য পণ্য ছিল ৬৪ শতাংশ।

এনবিআরের তথ্যমতে, বাংলাদেশের পোশাকের ভারতের শীর্ষ ক্রেতা হলো টাটা গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ট্রেন্ট লিমিটেড। আগস্টে মোট রপ্তানির ১৪ শতাংশ বা প্রায় ১ কোটি ১৪ লাখ ডলারের পোশাক নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এছাড়া এইচঅ্যান্ডএম, লেভি স্ট্রস, এমঅ্যান্ডএস, পুমা, ইউনিক্লো, ডিক্যাথেলন, পেপে জিন্স ও বেস্টসেলারসহ বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ডগুলোও ভারতের বাজারে বিক্রির জন্য বাংলাদেশ থেকে পোশাক আমদানি করছে।