চীনের জিয়ামিনএয়ার ডেলিভারি নেয়নি বোয়িংয়ের উড়োজাহাজ

প্রতিবেদন: চীনের এয়ারলাইন সংস্থা জিয়ামিনএয়ার-এর জন্য ৭৩৭ ম্যাক্স মডেলের একটি উড়োজাহাজ নির্মাণ করেছিল মার্কিন উড়োজাহাজ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান বোয়িং। উড়োজাহাজটির চূড়ান্ত সংযোজন কাজ সম্পন্ন হচ্ছিল চীনের ঝৌশানে বোয়িংয়ের নিজস্ব কেন্দ্রে। সেখানে চীনা ভাষায় জিয়ামিনএয়ারের নাম লেখাও ছিল উড়োজাহাজে। তবে শেষ পর্যন্ত চীনের এই বিমান সংস্থার কাছে পৌঁছাতে পারেনি সেটি।

মূলত চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের চলমান শুল্কযুদ্ধ এর পটভূমিতে জিয়ামিনএয়ার উড়োজাহাজটি গ্রহণ করেনি। ফলে উড়োজাহাজটি প্রায় ৮ হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটলে ফিরিয়ে আনা হয়। যাত্রাপথে এটি কেবল গুয়াম ও হাওয়াইয়ে জ্বালানি নিতে থেমেছিল। তবে এটি কার সিদ্ধান্তে ফিরিয়ে আনা হলো—জিয়ামিনএয়ার না বোয়িং—সে বিষয়ে কোনো পক্ষই আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি।

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র চীনা পণ্যের ওপর ১৪৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে। এর জবাবে চীন মার্কিন পণ্যের ওপর ১২৫ শতাংশ শুল্ক বসায়। এই পাল্টাপাল্টি শুল্ক নীতির অংশ হিসেবে চীন সরকার দেশের এয়ারলাইনগুলোকে বোয়িংয়ের উড়োজাহাজ গ্রহণ না করার নির্দেশনা দেয়। একইসঙ্গে মার্কিন যন্ত্রপাতি বা উড়োযান সরঞ্জাম কেনাও নিরুৎসাহিত করা হয়। এ নির্দেশনার ফলে চীনের বিভিন্ন এয়ারলাইন মোট ১৭৯টি উড়োজাহাজ কেনার পরিকল্পনা স্থগিত করেছে।

বিমান পরিবহন পরামর্শদাতা সংস্থা আইবিএ জানিয়েছে, ১৪৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ফলে একটি ৭৩৭ ম্যাক্স উড়োজাহাজের দাম দাঁড়ায় দেড়গুণেরও বেশি, যা সাড়ে পাঁচ কোটি ডলারের ভিত্তিমূল্য থেকে অনেক গুণ বেড়ে যায়। এই খরচ বহন করা কোনো চীনা এয়ারলাইনের পক্ষেই সম্ভব নয়।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, এই ঘটনায় বোঝা যাচ্ছে, শুল্কযুদ্ধ এখন সরাসরি সরবরাহ শৃঙ্খলেও প্রভাব ফেলছে। বোয়িংয়ের জন্য বিষয়টি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ, কারণ তাদের সর্বাধিক বিক্রীত মডেল হলো ৭৩৭ ম্যাক্স। প্রতিষ্ঠানটি নিজেদের যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ রপ্তানিকারক হিসেবে দাবি করে এবং বিশ্বের ১৫০টিরও বেশি দেশের সঙ্গে তাদের বাণিজ্যিক সম্পর্ক রয়েছে। এই তালিকায় চীন ছিল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্ভাবনাময় বাজারগুলোর একটি।