চীনের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি

প্রতিবেদক: ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) বাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে চলতি বছর চীন বাংলাদেশের তুলনায় এগিয়ে আছে। বছরের প্রথম চার মাসে চীন বাংলাদেশ থেকে ৩৮ কোটি ইউরো বেশি তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে। জুন শেষ পর্যন্ত এই ব্যবধান বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৭ কোটি ইউরো। শুধুমাত্র পরিমাণেই নয়, প্রবৃদ্ধিতেও চীন বাংলাদেশকে পেছনে ফেলেছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রে বিভিন্ন দেশের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপের পর চীনের তৈরি পোশাক রপ্তানি মার্কিন বাজারে হ্রাস পেয়েছে। ফলে চীনা উদ্যোক্তারা ইইউর বাজারে আগ্রাসী হয়ে ওঠে। তারা ক্রেতাদের কম দামে পোশাক সরবরাহ শুরু করে, যা বাংলাদেশি রপ্তানিকারকদের জন্য প্রতিযোগিতা আরও কঠিন করে তুলেছে।

বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের সবচেয়ে বড় বাজার ইইউ। মোট রপ্তানির অর্ধেকের গন্তব্য ইইউভুক্ত দেশগুলো। এ বাজারে শীর্ষ দুই অবস্থান দখল করেছে চীন ও বাংলাদেশ। পরের অবস্থানে রয়েছে তুরস্ক, ভারত এবং ভিয়েতনাম। ইউরোস্ট্যাটের তথ্যানুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে ইইউর দেশগুলো ৪,৩৩৯ কোটি ইউরোর তৈরি পোশাক আমদানি করেছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১২.৩% বৃদ্ধি পেয়েছে।

চীনের রপ্তানি বেড়েছে ২২.৩%, যা ১,১২৬ কোটি ইউরো। বাংলাদেশি রপ্তানি বেড়েছে ১৭.৯%, যা ১,০২৯ কোটি ইউরোতে পৌঁছেছে। তৃতীয় অবস্থানে থাকা তুরস্কের রপ্তানি কমেছে ৭% এবং ভারত ১৫.৪% বৃদ্ধির সঙ্গে ২৭০ কোটি ইউরোর তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে। ভিয়েতনামের রপ্তানি বেড়েছে ১৭.৩%।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চলতি বছর ২ এপ্রিল বিভিন্ন দেশের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপ করেন। এরপর সেটি কয়েক দফায় স্থগিত ও কার্যকর হয়। বাংলাদেশি পণ্যে ২০% শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। এতে মার্কিন ক্রেতারা যুক্তরাষ্ট্রের ক্রয়াদেশ কমিয়ে ইইউর বাজারে বেশি অর্ডার দিতে শুরু করেছেন।

বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ‘ইউরোপ আমাদের বড় বাজার। চীনা উদ্যোক্তারা মার্কিন শুল্কের প্রভাবে আমাদের বাজারে প্রবেশ করছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে রপ্তানি বাড়লে, আমরা ইইউতেও প্রতিযোগিতায় এগিয়ে যেতে পারব।’ তিনি আরও বলেন, ‘ভিয়েতনাম ইইউর সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্যচুক্তি করেছে। আমাদেরও এ ধরনের উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। ২০২৬ সালে এলডিসি থেকে উত্তরণের পর তিন বছরের জন্য জিএসপি প্লাস সুবিধা পাওয়া যাবে, যা আমাদের ইইউর বাজারে শক্ত অবস্থান গড়ে তুলবে।’