চুক্তির আগে ভূমি অধিগ্রহণ ও জনবল নিয়োগ বাধ্যতামূলক

প্রতিবেদক: অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) বিদেশি ঋণের আওতায় নেওয়া উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর কার্যক্রম আরও কার্যকর ও সময়োপযোগী করতে সাতটি নতুন শর্ত আরোপ করেছে। গত রোববার এ সংক্রান্ত একটি পরিপত্র জারি করে ইআরডি। এতে বলা হয়েছে, উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে ঋণ চুক্তি স্বাক্ষরের আগে প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় ভূমি অধিগ্রহণ ও তার কারণে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন পরিকল্পনা চূড়ান্ত করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে জমা দিতে হবে। একই সঙ্গে প্রকল্প পরিচালকসহ প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগের কাজও সম্পন্ন করতে হবে।

পরিপত্রে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) তৈরি করার সময় পরিকল্পনা কমিশনের নির্ধারিত স্তর বিন্যাস অনুযায়ী যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিতে হবে। পাশাপাশি পূর্ত, পণ্য ও সেবাবিষয়ক কাজের ব্যয় প্রাক্কলন, দরপত্র দলিলের খসড়া প্রস্তুত এবং কন্ট্রাক্ট অ্যাওয়ার্ডের আগ পর্যন্ত সব দরপত্র প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। উন্নয়ন সহযোগী এবং ইআরডির মধ্যে যেসব সাবসিডিয়ারি ঋণ চুক্তি স্বাক্ষর হবে, তার শর্তাবলি সম্পর্কে অর্থ বিভাগের সম্মতি নিতে হবে। এছাড়াও, ভৌত নির্মাণকাজ শুরু করার আগে বিদ্যুৎ, গ্যাস ও অন্যান্য পরিষেবা সরানোর জন্য প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সময়সীমা নির্ধারিত সমঝোতা স্বাক্ষরের শর্তও দেওয়া হয়েছে।

এই পরিপত্র জারির পেছনে রয়েছে বাস্তবতা-ভিত্তিক সমস্যা। পরিকল্পনা কমিশনের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি)-এর এক পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, একনেক বৈঠকে প্রকল্প অনুমোদনের পরই কাজ শুরু হয় এবং তখন প্রকল্প পরিচালক নিয়োগসহ ভূমি অধিগ্রহণ, বিদ্যুৎ-গ্যাস লাইন সরানো ইত্যাদি কার্যক্রম শুরু হয়। অথচ ঋণচুক্তি সেই আগেই স্বাক্ষরিত হয়। এতে করে প্রকল্প বাস্তবায়নে সময়ক্ষেপণ ও ব্যয় বৃদ্ধি ঘটে। এসব জটিলতা এড়াতে এবার ডিপিপি প্রণয়নের আগেই প্রস্তুতিমূলক কাজগুলো সম্পন্ন করার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।

পরিপত্রে বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থাগুলোকে এসব শর্ত অবশ্যই ডিপিপি প্রস্তুতের আগেই মেনে চলতে হবে। বিষয়টির গুরুত্ব বিবেচনায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে পরিপত্র পাঠানো হয়েছে। উন্নয়ন কার্যক্রমে গতি আনা, সময় ও ব্যয়ের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে ইআরডির এই উদ্যোগ গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন অর্থনীতি সংশ্লিষ্টরা।