ছয় ধরনের পণ্য রপ্তানিতে হঠাৎ নিষেধাজ্ঞা, হুমকির মুখে স্থলবন্দরের রপ্তানি ব্যবসা

প্রতিবেদক: ভারতের হঠাৎ আরোপ করা নিষেধাজ্ঞায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দরে রপ্তানি বাণিজ্যে বড় ধাক্কা লেগেছে। ছয় ধরনের পণ্যে নিষেধাজ্ঞার কারণে গত পাঁচ দিনে রপ্তানি কমেছে প্রায় ৪০ শতাংশ, ফলে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৪০ লাখ টাকার ক্ষতির মুখে পড়েছে ব্যবসায়ীরা। সব মিলিয়ে ক্ষতির পরিমাণ ইতোমধ্যেই ২ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।

গত শনিবার ভারতের প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, তৈরি পোশাক; ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয় ও কোমল পানীয়; প্রক্রিয়াজাত খাদ্য; প্লাস্টিক পণ্য; সুতা ও সুতার উপজাত; এবং আসবাবপত্র—এই ছয় ধরনের পণ্য এখন থেকে আমদানি করা যাবে না। এর মধ্যে পাঁচটি পণ্য নিয়মিত আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে রপ্তানি হতো।

শুল্ক স্টেশন সূত্রে জানা গেছে, এই নিষেধাজ্ঞার পর থেকে নিষিদ্ধ পণ্যের একটি গাড়িও বন্দরে আসেনি। অথচ গত দুই অর্থবছরে এই বন্দর দিয়ে প্রায় ৮৮০ কোটি টাকার পণ্য ভারতে রপ্তানি হয়েছে।

স্থলবন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি নিছার উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন,এভাবে চলতে থাকলে রপ্তানি কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাবে। ব্যবসায়ীরা চরম ক্ষতির মুখে পড়ছেন।

রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান ‘মেসার্স জে আর ট্রেডিং’ ও ‘মেসার্স পূর্বা অ্যান্ড ব্রাদার্স’-এর মালিক আবু সুফিয়ান বলেন,
বিস্কুট প্রতিদিন ১০-১৫ টন, কোমল পানীয় মাসে ৭০-৮০ টন, প্লাস্টিক পণ্য মাসে ৪০-৫০ টন, সুতা মাসে ১৮০ টন রপ্তানি করতাম। এখন সব বন্ধ হয়ে গেছে।

এই বন্দরে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ, এসিআই, স্কয়ারসহ অনেক প্রতিষ্ঠানের পণ্য নিয়মিত রপ্তানি হতো। সিমেন্ট, তাজা ও শুঁটকি মাছ, পাথর, বর্জ্য তুলা, মেলামাইন পণ্য, থ্রেসিং মেশিনসহ নানা রকম পণ্য ভারতের ত্রিপুরায় রপ্তানি করা হয় এই বন্দর দিয়ে।

শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন,আমাদের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম এখনো সচল রয়েছে এবং রাজস্ব আন্দোলনের আওতাভুক্ত নয়। তবে ভারতের নিষেধাজ্ঞা কার্যত রপ্তানি কার্যক্রমে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

স্থানীয় ব্যবসায়ীদের দাবি, দ্রুত ভারতের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার না হলে আখাউড়া স্থলবন্দর হারাবে তার রপ্তানিমুখী সক্ষমতা এবং এতে দেশের রাজস্ব ও বৈদেশিক বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হবে।