
প্রতিবেদক: জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কলমবিরতি চলছে । শনিবার টানা তৃতীয় দিনের মতো এই কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। এর ফলে দেশের আমদানি-বাণিজ্যসহ রাজস্ব খাতের কর্মকাণ্ডে বড় ধরনের বিঘ্ন সৃষ্টি হয়েছে। ঢাকার পাশাপাশি চট্টগ্রাম, যশোরের বেনাপোলসহ দেশের প্রায় সব কাস্টম হাউস ও শুল্ক-কর কার্যালয়গুলোতে কার্যত কোনো কার্যক্রমই চলছে না। এতে আমদানি-সংক্রান্ত ব্যবসা-বাণিজ্যে দেখা দিয়েছে চরম ভোগান্তি।
সকাল থেকে ঢাকা কাস্টমস হাউসে কার্যক্রম বন্ধ দেখা গেছে। একই চিত্র রাজধানীর অন্যান্য ভ্যাট ও কর কার্যালয়গুলোতেও। তবে অধিকাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারী যথারীতি অফিসে উপস্থিত হয়েছেন, কিন্তু তাঁরা কলমবিরতি কর্মসূচির অংশ হিসেবে কোনো দাপ্তরিক কাজ করছেন না।
এই কর্মসূচি চলছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলুপ্তির অধ্যাদেশ জারির প্রতিবাদে। ক্যাডার ও নন-ক্যাডার কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত ‘এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ’-এর ব্যানারে এই আন্দোলন হচ্ছে। গত বুধবার ও বৃহস্পতিবার কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় আজ শনিবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত কলমবিরতি চলছে। সরকারি নির্দেশে ঈদের ছুটি সমন্বয়ের জন্য আজ শনিবার অফিস খোলা রাখা হলেও কর্মবিরতি অব্যাহত রয়েছে।
এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের নেতারা তিন দফা দাবি উপস্থাপন করেছেন। তাদের দাবি হলো-রাজস্ব অধ্যাদেশ’ অবিলম্বে বাতিল করতে হবে।এনবিআর সংস্কার-সংক্রান্ত পরামর্শক কমিটির প্রতিবেদন জনসমক্ষে প্রকাশ করতে হবে। এনবিআর, ব্যবসায়ী সংগঠন, সুশীল সমাজ, রাজনৈতিক নেতাসহ সব অংশীজনের মতামতের ভিত্তিতে রাজস্বব্যবস্থার সংস্কার করতে হবে।
প্রসঙ্গত, কলমবিরতির সময় আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা, বাজেট সংক্রান্ত কার্যক্রম এবং রপ্তানি—এই তিন ধরনের কার্যক্রম অব্যাহত রাখা হয়েছে যাতে জরুরি ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত না হয়।
গত সোমবার রাতে সরকার ‘জাতীয় রাজস্ব বোর্ড’ ও ‘অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ’ (আইআরডি) বিলুপ্ত করে দুটি নতুন বিভাগ—‘রাজস্ব নীতি বিভাগ’ ও ‘রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ’ গঠনের অধ্যাদেশ জারি করে। এই সিদ্ধান্তের পরপরই এনবিআরের আওতাধীন সব কর অঞ্চল, ভ্যাট ও শুল্ক কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মঙ্গলবার থেকে কলমবিরতি কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
আজ কলমবিরতির শেষ দিন। বিকেল তিনটায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করবে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ।