
প্রতিবেদক: বিশ্ববাজারে টানা দুই সপ্তাহ ধরে সোনার দাম কমেছে। গতকাল শুক্রবার শেষ হওয়া সপ্তাহে আন্তর্জাতিক বাজারে সোনার দর ২ দশমিক ৬ শতাংশের বেশি কমেছে। শুধু গতকালই স্পট মার্কেটে সোনার দাম কমে শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ নেমে এসেছে আউন্সপ্রতি ৩,২২৮.৫০ ডলারে। অথচ এর আগে, ২২ এপ্রিল সোনার দাম ইতিহাসের সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠে দাঁড়িয়েছিল আউন্সপ্রতি ৩,৫০০ ডলার।
তবে আজ শনিবার কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে সোনার বাজার। গত দুই সপ্তাহের মধ্যে সর্বনিম্ন দামে পৌঁছানোর পর বিনিয়োগকারীদের ‘বার্গেইন হান্টিং’ প্রবণতার কারণে বাজারে ক্রেতা বাড়ায় দামের ওপর ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এর ফলে ইউএস গোল্ড ফিউচার্সের দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩,২৪৩.৩০ ডলারে, যা শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ বৃদ্ধি।
বিশ্লেষকদের মতে, স্বর্ণের চাহিদা দীর্ঘমেয়াদে এখনো জোরালো। তাই দাম কিছুটা কমে যাওয়ায় অনেকেই সোনা কিনে রাখছেন ভবিষ্যতের লাভের আশায়। তাদের ধারণা, এখনো সোনার বাজারে বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে, কারণ বর্তমান মূল্য সর্বোচ্চ দামের তুলনায় কয়েক শ ডলার কম।
গোল্ড প্রাইস ডট অর্গ-এর তথ্য অনুযায়ী, বাণিজ্যনীতিতে অনিশ্চয়তার কারণে গত এক মাসে সোনার দাম আউন্সপ্রতি ৩ দশমিক ৬৯ শতাংশ বা ১১৪.৪৭ ডলার বেড়েছে। তবে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন চীনের সঙ্গে আলোচনা শুরু করার আগ্রহ দেখান, তখন থেকেই সোনার দামে নিম্নমুখী চাপ তৈরি হয়। চীনও আলোচনায় আগ্রহ দেখানোয় বাজারে কিছুটা স্থিতিশীলতা ফিরে আসে এবং নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে সোনার প্রতি আগ্রহ কমতে থাকে।
তবে স্বর্ণের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা নিয়ে আশাবাদী বিশ্লেষকেরা। গোল্ডম্যান স্যাক্স পূর্বাভাস দিয়েছে, চলতি বছরের শেষ নাগাদ সোনার দাম আউন্সপ্রতি ৩,৭০০ ডলারে পৌঁছাতে পারে। তাদের পূর্ববর্তী পূর্বাভাস ছিল ৩,৩০০ ডলার। দীর্ঘমেয়াদে এই দাম ৩,৬৫০ থেকে ৩,৯৫০ ডলারের মধ্যে ওঠানামা করতে পারে বলেও মনে করছে তারা। এই পূর্বাভাসের ভিত্তি হচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর চাহিদা এবং সোনাভিত্তিক ইটিএফে (এক্সচেঞ্জ-ট্রেডেড ফান্ড) বিনিয়োগ বৃদ্ধি।
সব মিলিয়ে বলা যায়, স্বল্পমেয়াদে কিছুটা চাপে থাকলেও দীর্ঘমেয়াদে স্বর্ণের বাজারে ইতিবাচক সম্ভাবনা রয়েছে।