টেকসই ডেনিমের প্রদর্শনীতে বিদেশি-দেশি ৫৮ প্রতিষ্ঠান

প্রতিবেদক: দেশে তৈরি টেকসই উপকরণে ডেনিম কাপড় নিয়ে এসেছে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। অনেকে আবার এনেছে বিভিন্ন ওয়াশের ডেনিম পোশাক ও টেকনিক্যাল পণ্য। পাশাপাশি প্রদর্শনীতে রয়েছে লেজার মেশিন, রাসায়নিক ও অন্যান্য সরঞ্জাম। সব মিলিয়ে দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো নতুন প্রযুক্তি ও পণ্যের মাধ্যমে ডেনিম শিল্পের ভবিষ্যৎ তুলে ধরছে।

সোমবার পূর্বাচলের আন্তর্জাতিক কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইবিসিসি) শুরু হয়েছে দুই দিনব্যাপী ‘বাংলাদেশ ডেনিম এক্সপো’। সকাল থেকে মেঘলা আকাশ ও বৃষ্টি উপেক্ষা করে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের উপস্থিতি বাড়তে থাকে দুপুরের পর থেকেই।

এই প্রদর্শনীর আয়োজন করছে বাংলাদেশ অ্যাপারেল এক্সচেঞ্জ (বিএই), যারা এক যুগ ধরে ধারাবাহিকভাবে এ আয়োজন করে আসছে। এবারের এক্সপোতে অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, চীন, ইতালি, যুক্তরাষ্ট্র, সুইজারল্যান্ড, তুরস্ক, ভিয়েতনামসহ বিভিন্ন দেশের ৫৮টি প্রতিষ্ঠান। যদিও ভারত-পাকিস্তানের চলমান দ্বন্দ্বের কারণে দুই দেশের ২০টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিতে পারেনি, এমনটি জানান বিএইর পরিচালক আবু হায়দার কবির।

প্রদর্শনীতে অংশ নেওয়া অন্যতম প্রতিষ্ঠান আজলান ডেনিম লিমিটেড। নারায়ণগঞ্জের গাউছিয়া এলাকায় অবস্থিত এ প্রতিষ্ঠানের মাসিক উৎপাদনক্ষমতা ১৫ লাখ গজ, যা আগামী জুলাইয়ে বেড়ে দাঁড়াবে ২৫ লাখ গজ। প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক (বিপণন ও বিক্রয়) সানাউল হক জানান, ‘ভালো ক্রয়াদেশ পাওয়ায় আমরা কারখানা সম্প্রসারণ করছি। ক্রেতাদের সামনে আমাদের পণ্য তুলে ধরার পাশাপাশি অন্যদের পণ্যও আমরা পর্যবেক্ষণ করছি।’

আরগন ডেনিম এ প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণকারী আরেক পরিচিত প্রতিষ্ঠান। তাদের মাসিক উৎপাদনক্ষমতা ২২ লাখ গজ। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপক ইয়াসিন আল ফয়সাল জানান, প্রতি গজ ডেনিম কাপড়ের গড় দাম ২ ডলার ৮০ সেন্ট, তবে টেকসই উপকরণে তৈরি পণ্যের দাম একটু বেশি—প্রতি গজে ১০-১৫ সেন্ট বেশি পড়ে। ইউরোপীয় বাজারে এই পণ্যের চাহিদা বাড়ছে বলে তিনি জানান।

প্রদর্শনীতে সবচেয়ে বেশি—৩৬টি প্রতিষ্ঠান এসেছে চীন থেকে। এর মধ্যে ডেনিম কাপড় উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ব্ল্যাক পিওনি টেক্সটাইল কোম্পানি-এর ঢাকায় নিজস্ব কার্যালয়ও রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির বিক্রয় ব্যবস্থাপক চাও জি বলেন, ‘বাংলাদেশ সম্ভাবনাময় বাজার। এখানে বেশি দামের পোশাকের ব্যবসাও বাড়ছে।’ তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক তাদের ব্যবসায় প্রভাব ফেলেনি, কারণ তারা বৈচিত্র্যময় বাজারে পণ্য রপ্তানি করে।

এ ছাড়াও অংশ নিয়েছে আরও নামকরা প্রতিষ্ঠান যেমন: আমেরিকান অ্যান্ড ইফার্ড বাংলাদেশ, আজগার্ড নাইন, বেস্ট টেক্স কেমিক্যালস, ওয়াইকেকে বাংলাদেশ, খান এক্সেসরিজ অ্যান্ড প্যাকেজিং, ব্লুসাইন টেকনোলজিস এজি, চেরি বাটন, সিলিক্যান্ট, কালার সেন্টার এসএ, ড্যানিস, ডেনিম সলিউশনস প্রভৃতি।

বাংলাদেশ অ্যাপারেল এক্সচেঞ্জের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোস্তাফিজ উদ্দিন বলেন, ‘টেকসই পণ্যের চাহিদা এখন সর্বত্র বাড়ছে। তবে বড় চ্যালেঞ্জ হলো, ক্রেতারা বাড়তি পয়সা দিতে চান না।’ তারপরও এবারের এক্সপোতে দেশি-বিদেশি বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠান টেকসই পণ্যের দিকেই নজর দিয়েছে বলে জানান তিনি।