ট্রাম্প প্রশাসনের বাড়তি শুল্কের প্রভাবে বিশ্ব বাজারে ধস, বাংলাদেশে শেয়ারবাজারে পতন সীমিত

প্রতিবেদক: যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন বাংলাদেশি পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ করার ঘোষণা দেওয়ার পর বিশ্বের শেয়ারবাজারে তীব্র ধস নেমেছে। বিশেষত যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের শেয়ারবাজারে বড় পতন দেখা গেছে। তবে ঈদের ছুটি শেষে যখন বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয়, তখন শেয়ারবাজারের পতনের আশঙ্কা থাকলেও তেমন কিছু ঘটেনি। ঢাকার শেয়ারবাজারে বেশিরভাগ শেয়ার দাম হারালেও, পতনের হার ছিল অনেক কম এবং সূচকের পতনও সীমিত ছিল।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স ১৩ দশমিক ৯৭ পয়েন্ট বা ০.২৬ শতাংশ কমে ৫২০৫ পয়েন্টে নেমেছে। এ পতন গত ২৩ মার্চের তুলনায়ও কম ছিল, তখন সূচকটি ১৮ পয়েন্টের বেশি কমেছিল। তবে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) এর প্রধান সূচক সিএসসিএক্স ০.১৩ শতাংশ বেড়ে ৮৮৫৪ পয়েন্টে উঠে।

ডিএসইর লেনদেন ১০০ কোটি টাকা বেড়ে ৪১৫ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে, যা বাজারের মাঝে কিছুটা স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করেছে। যদিও বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার দাম হারিয়েছে, তবে এটি আশঙ্কাজনক পরিস্থিতি তৈরি করেনি। বিশেষ করে মিউচুয়াল ফান্ড খাতে বেশ কিছু শেয়ারের দাম বেড়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক বাড়ানোর খবরে বাংলাদেশি বস্ত্র খাতের শেয়ারগুলি বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, কারণ এই খাতের প্রায় সব শেয়ার যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানির সাথে সম্পর্কিত। ঢাকার শেয়ারবাজারে বস্ত্র খাতের ৫৮ কোম্পানির মধ্যে ৫৭টি শেয়ার দর হারিয়েছে, গড়ে ৩.৩৮ শতাংশ কমেছে এবং বাজার মূলধন ৩.৮৮ শতাংশ কমেছে।

এদিকে, শেয়ারবাজারের লেনদেনে অংশ নেওয়া প্রাইম ব্যাংক সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান মন্তব্য করেছেন যে, বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে বড় ধরনের পতনের শঙ্কা নেই। কারণ, বাংলাদেশের মোট রপ্তানির ১৮ শতাংশের গন্তব্য যুক্তরাষ্ট্র এবং সেখানে বাংলাদেশি তৈরি পোশাকের চাহিদা অটুট রয়েছে। তিনি ২০০৮ সালের মন্দার উদাহরণ দিয়ে বলেন, সংকটকালে বাংলাদেশের পণ্যের চাহিদা বেড়েছে, কারণ অন্যান্য দেশ কম মূল্যে পণ্য সরবরাহ করতে পারে না।

এভাবে, যদিও বিশ্বের বড় বাজারে শেয়ারপতন হয়েছে, বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, এবং ব্যবসায়ীরা আশাবাদী যে দেশের শেয়ারবাজারে বড় ধরনের পতন হবে না।