ডলার বাজারে স্থিতিশীলতা আনতে বাংলাদেশ ব্যাংকের পদক্ষেপ

প্রতিবেদক: অর্থ পাচার রোধে সরকারের কঠোর পদক্ষেপের কারণে প্রবাসী আয় ও রপ্তানি আয়—দুটিই বেড়েছে। এতে বাজারে ডলারের সরবরাহ বৃদ্ধি পেয়েছে। সাধারণত এমন পরিস্থিতিতে ডলারের দাম কমার কথা থাকলেও বাংলাদেশ ব্যাংক দাম স্থিতিশীল রাখতে বাজার থেকে ডলার কিনছে।

গতকাল সোমবার ২৬ ব্যাংক থেকে ৩৫ কোটি ৩০ লাখ ডলার কিনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রতি ডলার কেনা হয়েছে ১২১ টাকা ৭৫ পয়সা দরে। চলতি অর্থবছরে এখন পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংক মোট ১৭৪ কোটি ৭৫ লাখ ডলার কিনেছে। এর ফলে একদিকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ছে, অন্যদিকে ডলারের দামও ১২০ টাকার ওপরে থাকছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, জুলাই থেকে আজ পর্যন্ত যেসব ব্যাংকের কাছে অতিরিক্ত ডলার ছিল, তারা নিলামের মাধ্যমে এসব ডলার বিক্রি করেছে। এর ফলে এখন ডলারের দাম পুরোপুরি বাজারভিত্তিক হয়ে উঠেছে। এটি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) একটি শর্ত ছিল। বর্তমানে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আইএমএফের নির্ধারিত মাত্রার চেয়েও বেশি।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে ২০২২ সাল থেকে ডলারের দাম বেড়ে ৮৫ টাকা থেকে ১২২ টাকায় পৌঁছায়। এতে দেশের অর্থনীতিতে মুদ্রাস্ফীতি বেড়ে যায় এবং সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা কঠিন হয়ে পড়ে। বাংলাদেশ ব্যাংক রিজার্ভ থেকে ২৫ বিলিয়নের বেশি ডলার বিক্রি করেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি। তবে গত বছরের আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এবং চলতি বছরের মার্চে রিজার্ভ বাড়তে শুরু করলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক আবার বাজার থেকে ডলার কেনা শুরু করে।

এদিকে, ডলার সংকট কাটাতে সবচেয়ে বড় অবদান রাখছে প্রবাসী আয়। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে দেশে প্রবাসী আয় এসেছে ৩০ দশমিক ৩২ বিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরের তুলনায় প্রায় ২৭ শতাংশ বেশি। চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই-আগস্ট) এসেছে প্রায় পাঁচ কোটি ডলার, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৮ দশমিক ৪১ শতাংশ বেশি।

একই সময়ে রপ্তানি আয়ও বেড়েছে। গত অর্থবছর শেষে রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি ছিল ৭ দশমিক ৭২ শতাংশ। অন্যদিকে, আমদানি খাতে ব্যয় হয়েছে ৬৮ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরের তুলনায় ২ দশমিক ৪৪ শতাংশ বেশি।