
প্রতিবেদক: ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার (ডিআইটিএফ) নাম পরিবর্তন করে আগামী বছর থেকে রাখা হচ্ছে ঢাকা বাণিজ্য মেলা (ডিটিএফ)। দীর্ঘদিনের নাম থেকে বাদ যাচ্ছে ‘আন্তর্জাতিক’ শব্দটি। ১৯৯৫ সাল থেকে ডিআইটিএফ আয়োজন হয়ে আসছে। প্রথমে আগারগাঁওয়ে হলেও বর্তমানে পূর্বাচলে মেলা আয়োজন করছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)।
আজ সোমবার ইপিবির কার্যালয়ে সংস্থাটির ১৪৮তম পরিচালনা পর্ষদের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান, ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেন, অতিরিক্ত সচিব (রপ্তানি) আবদুর রহিম খান, বিজিএমইএর সভাপতি মাহমুদ হাসান খান, মেট্রো চেম্বারের সভাপতি কামরান তানভীর রহমান প্রমুখ।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ডিআইটিএফ আন্তর্জাতিক মেলা হলেও বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো সরাসরি অংশ নিচ্ছে না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তারা দূতাবাস, প্রতিনিধি দল বা স্থানীয় এজেন্টের মাধ্যমে অংশ নেয়। ফলে পণ্যের মান যাচাই করা যায় না, অনেক সময় মানহীন পণ্য বিদেশি ব্র্যান্ড নামে উপস্থাপন করা হয়। এতে ক্রেতারা প্রতারিত হন এবং মেলার আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়।
এমন পরিস্থিতিতেই নাম থেকে ‘আন্তর্জাতিক’ শব্দটি বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যদিও বৈঠকে কিছু সদস্য এ পরিবর্তনের বিরোধিতা করেন, তবে ইপিবির চেয়ারম্যান শেখ বশিরউদ্দীন ও ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন এ বিষয়ে অনড় ছিলেন।
ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বলেন, “নামে আন্তর্জাতিক হলেও এটা প্রকৃত অর্থে আন্তর্জাতিক মেলা নয়। তাই মেলার নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত হয়েছে।”
ডিআইটিএফে যেসব বিদেশি প্রতিষ্ঠান অংশ নিত—তুরস্ক, পাকিস্তান, ভারতসহ বিভিন্ন দেশের সেসব প্রতিষ্ঠান নতুন নামের ঢাকা বাণিজ্য মেলাতেও অংশ নিতে পারবে।
সভায় আরও সিদ্ধান্ত হয়, ইপিবির ব্যবস্থাপনায় আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় অংশগ্রহণের জন্য ২০২৫-২৬ অর্থবছরের মেলা ক্যালেন্ডার এবং ২০২৬-২৭ অর্থবছরের আংশিক ক্যালেন্ডার অনুমোদন দেওয়া হবে।
রপ্তানিমুখী শিল্প ও উৎপাদকদের জন্য বৈশ্বিক বাজার সম্প্রসারণ এবং বাজার বহুমুখীকরণ কৌশলের অংশ হিসেবে ইপিবি একটি স্বতন্ত্র আন্তর্জাতিক সোর্সিং ফেয়ার আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আগামী নভেম্বরে অনুষ্ঠিত হবে ‘সোর্সিং বাংলাদেশ ২০২৫’ শীর্ষক মেলা।
বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান বলেন, “সোর্সিং মেলা আয়োজন না করলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশি পণ্যের পরিচিতি বাড়বে না। পাশাপাশি আমাদের সক্ষমতাও তৈরি হবে না।” তিনি আরও জানান, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের দূতাবাসগুলোর মাধ্যমে এই মেলার প্রচারণা জোরদার করা হবে।