ডিসি পার্কের ঘটনার জেরে চট্টগ্রাম বন্দরে কন্টেইনার পরিবহন বন্ধ

অনলাইন ডেক্স: চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার ফৌজদারহাটে ডিসি পার্কের নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষের জেরে চট্টগ্রাম বন্দরে কন্টেইনার পরিবহন বন্ধ করে দিয়েছেন প্রাইম মুভার ট্রেইলার শ্রমিকরা। গতকাল (রবিবার) রাত ৮টা থেকে চট্টগ্রাম বন্দর ও ২১টি বেসরকারি কন্টেইনার ডিপোর মধ্যে আমদানি-রপ্তানি পণ্য পরিবহন বন্ধ রয়েছে।

বেসরকারি ইনল্যান্ড কন্টেইনার ডিপো মালিকদের সংগঠন বিকডা’র মুখপাত্র রুহুল আমিন সিকদার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, প্রাইম মুভার ট্রেইলার ড্রাইভারদের কর্মবিরতির কারণে কন্টেইনার পরিবহন পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে।

গতকাল সন্ধ্যা ৭টার দিকে ফৌজদারহাট-চট্টগ্রাম বন্দর টোল রোডের পাশে অবস্থিত ডিসি পার্কে এ ঘটনা ঘটে। সেখানে এক মাস ধরে ফুল উৎসব চলছে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, পার্কিং লট থেকে একটি প্রাইভেটকার রাস্তায় বের হওয়ার সময় বন্দর থেকে আসা একটি প্রাইম মুভার দ্রুতগতিতে এসে হঠাৎ ব্রেক করলে প্রাইভেটকারটিকে হালকা ধাক্কা দেয়। পার্কের এক নিরাপত্তাকর্মী ওই প্রাইম মুভারকে থামার সংকেত দিলেও চালক তা উপেক্ষা করেন।

এ ঘটনায় নিরাপত্তাকর্মীরা প্রাইম মুভারের চালককে থামিয়ে প্রতিবাদ জানালে, চালক অন্যান্য ট্রেইলার ড্রাইভারদের খবর দেন। তারা ঘটনাস্থলে এসে নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে বচসায় জড়ান।

সীতাকুণ্ড উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল মামুন বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করেন। তবে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে বেশ কিছু ব্যক্তি পার্কের ভেতরে ঢুকে বিভিন্ন স্থাপনায় ভাঙচুর চালান।

এরপর প্রাইম মুভার শ্রমিকরা টোল রোডে দেড় ঘণ্টা অবরোধ করেন। পরে সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হস্তক্ষেপে রাত সোয়া ৯টার দিকে তারা অবরোধ তুলে নেন।

কিন্তু রাত ১০টার দিকে শ্রমিকরা আবার চট্টগ্রাম বন্দরের সিসিটি গেটের কাছে সল্টগোলা ক্রসিংয়ে সড়ক অবরোধ করেন, যা নগরীতে তীব্র যানজট সৃষ্টি করে। মধ্যরাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হস্তক্ষেপ করলে শ্রমিকরা ব্যারিকেড সরিয়ে নেন, তবে কন্টেইনার পরিবহনে কর্মবিরতি শুরু করেন।

চট্টগ্রাম জেলা প্রাইম মুভার ট্রেইলার শ্রমিক ইউনিয়নের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান মাহমুদ বলেন, “ডিসি পার্কের নিরাপত্তাকর্মীরা তুচ্ছ ঘটনায় শ্রমিকদের মারধর করেছেন। আমরা এর বিচার না পাওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি চালিয়ে যাব।”

শ্রমিক নেতারা দাবি করেছেন, শ্রমিকদের ওপর হামলায় জড়িত নিরাপত্তাকর্মী ও আনসার সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে, অন্যথায় কন্টেইনার পরিবহন বন্ধ থাকবে।

এই পরিস্থিতিতে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে বন্দর কর্তৃপক্ষ ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসন সমাধানের উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানা গেছে।